মৃতু সংবাদ শুনলে সনাতন ধর্ম মতে কি বলতে হয়?
সনাতনধর্ম মতে মৃত্যু সংবাদ শুনলে বলবেন " ওঁ দিব্যান্ লোকান্ স গচ্ছতু " হিন্দু ধর্ম মতে কোন পুরুষ,নারী বা শিশু মারা গেলে সাথে সাথেই এই মন্ত্রটি জব করুন।
☞অর্থ- তিনি দিব্যলোকে গমন করুক।☞বাংলা(সে, সেই,তিনি,তাহা)☞সংস্কৃত (স সঃ সা)স হল উভয়লিঙ্গসঃ হল পুংলিঙ্গসা হল স্ত্রীলিঙ্গনারী পুরুষ ভেদাভেদ না করা যাবে না মৃত ব্যক্তিকে তাই একই সবার উদ্দেশ্য বলতে হয়।যথা---" ওঁ দিব্যান্ লোকান্ স গচ্ছতু "
☞বর্তমানে আমরা কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া বা অন্য কোন মারকন অনেকেই ভুল ভাবে মন্ত্র উচ্চারণ বা লিখে থাকি যেমন ..ওঁ দিব্যান লোকান স্ব গচ্ছতুস্ব অর্থ নিজেতাহলে অর্থ হয়"দিব্যলোকে আমি গমন করি।"এবার আপনারাই নিজেই বিচার করুন.....
![]() |
মৃত্যু সংবাদ শুনলে করণীয় |
হিন্দুধর্ম মতে মৃত্যু সংবাদ শুনলে কি বলবেন?
☞আসুন বেদে সেই মন্ত্রটি সম্পূর্ণ দেখি
“ওঁ কৃত্বা-তু দুষ্কৃতং কর্মং জানতা বাপ্য জানতা,
মৃত্যুকাল বশং প্রাপ্য নরং পঞ্চত্বমাগতম্।।
ধর্মাধর্ম সমাযুক্তং লোভ মোহ সমাবৃতম্
দহেয়ং সর্বগাত্রানি দিব্যান্ লোকান্ স গচ্ছতু।।
অনুবাদঃ মৃত ব্যাক্তি অনেক সময় জেনে বা না জেনে অনেক দুষ্কর্ম করে থাকতে পারেন। মানুষ মৃত্যুবরণ করে থাকে কালবশে। এ দেহ আচ্ছাদিত ছিল ধর্ম, অধর্ম, লোভ, মোহ প্রভৃতি দ্বারা । আপনি তার সকল দেহ দগ্ধ করে দিব্যলোকে নিয়ে যান হে আমাী প্রিয় অগ্নিদেব। ( ক্রিয়াকাণ্ড বারিধি)ব্যাখ্যা ও বিস্তারিত : জীবনের একটি অঙ্গ হলো জন্ম ও মৃত্যু। পরিবারের সদস্যরা শোকপালনের মধ্য দিয়ে যান। ফলে হিন্দু রীতি মেনে পরিবারের সদস্যরা মৃতের আত্মীর শান্তি কামনা করে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করে থাকেন। সেই রীতির মধ্যে অন্যতম প্রথা হল, মাথা ন্যাড়া হওয়া। হিন্দু ধর্মে, পিতামাতা বা কাছের কারও মৃত্যুর পরে মাথা ন্যাড়া করা হয়। কী বলছে গরুড় পুরাণ? জন্ম ও মৃত্যু—এই দুটি বিষয় কখনো আগাম বলে কয়ে আসে না। হিন্দুধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, জন্ম ও মৃত্যু উভয়ই পূর্বনির্ধারিত ভাগ্যের অন্তর্ভুক্ত। তাই এই দুটি ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে একাধিক ধর্মীয় প্রথা ও সামাজিক রীতি। একজন মানুষের মৃত্যু যেমন পরিবার ও সমাজে গভীর শোক নিয়ে আসে, তেমনি পরিবারের কোনো সদস্যের জন্ম আনন্দ, উৎসব এবং নতুন আশার বার্তা নিয়ে আসে। একটি শিশুর জন্মকে কেন্দ্র করে পালিত হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান, যেমন—নামকরণ, অন্নপ্রাশন, ফটোশ্যুট ইত্যাদি। ঠিক তেমনি, নতুন চাকরি, ব্যবসা শুরু কিংবা গৃহপ্রবেশের মতো শুভ কাজের সঙ্গেও কিছু বিশেষ আচার ও রীতি পালন করা হয়। গরুড় পুরাণ অনুসারে, কোনো পরিবারে সদস্যের মৃত্যু হলে সেখানে “সূতক” নামক শোকাবস্থা আরোপ করা হয়। আবার কোনো নবজাতক জন্ম নিলে “সুচক” বা পবিত্রতার রীতিও অনুসরণ করা হয়। মৃত্যুর পর সমস্ত দাহসংক্রান্ত আচার শেষ হলে পরিবারের সদস্যদের ৭, ১১, ১৩ ও ৩০ দিন পর্যন্ত অশৌচের নিয়ম মানতে হয়। এই সময় অনেক কাজ নিষিদ্ধ হিসেবে বিবেচিত হয়—যেমন: শুভ অনুষ্ঠানে যোগদান, নতুন জামাকাপড় পরা, নতুন কিছু কেনা বা রান্না করা। শ্রাদ্ধের সময় প্রাচীন রীতিমাফিক মুণ্ডন (মাথার চুল কাটা) পালন করা হয়, যা মৃতের প্রতি সম্মান ও আত্মিক শুদ্ধতার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত। প্রাণীর চুলকে শারীরিক জগতের সঙ্গে যোগাযোগ ও সংযুক্তির যুক্ত থাকার কথা উল্লেখ রয়েছে বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থে। পিতামাতা বা প্রিয়জনের মৃত্যুর পরে, শোক বা দুঃখ প্রকাশ করার জন্য মাথা ন্যাড়া করা হয়। কিছুদিনের জন্য সেই ব্যক্তি মনোযোগ পার্থিবো আসক্তি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় এর মাধ্যমে ।হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী মাথা ন্যাড়া করে মৃতের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করা হয়ে থাকে। গরুড় পুরাণ অনুসারে, মাথা ন্যাড়া করলে অশৌচের কাজ সমাপ্ত হয়। মুণ্ডন হল আত্মার সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করার একটি মাধ্যম। বিশ্বাস করা হয়, চুলও নেতিবাচক শক্তিকে আকর্ষণ করে।পুরাণ মতে এর অর্থ হল , মৃত ব্যক্তির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ও ১৩দিন পর্যন্ত, সেই আত্মা তার পরিবারের সঙ্গে আবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে।এই কারণে আত্মার সাথে জীবনের সকল প্রকার টা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় চুল মুণ্ডন করার মধ্য দিয়ে।এর একটি বৈজ্ঞানিক ঠিক আছে যেমন কোনও ব্যক্তির মৃত্যুর পর মুণ্ডন হওয়ার কারনে মৃত্যুর পর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতারও খুব যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। মৃত ব্যক্তির আশেপাশে বা শ্মশানে অনেক ধরণের ব্যাকটেরিয়া থাকে। তাই ভাইরাস বা রোগভোগ থেকে মুক্তি পেতে এই নিয়ম মেনে চলা উচিত। তাই মাথার চুল ফেলে দিয়ে পরিচ্ছন্নতা ও বিশুদ্ধতা বজায় রাখার কারনে মুন্ডনও গুরত্বপূর্ণ।
মানুষ মারা গেলে কি ধরনের মন্তব্য করা উচিত ?
মানুষ মারা গেলে মন্তব্য করার সময় সংবেদনশীল, সহানুভূতিশীল ও সম্মানজনক হওয়া উচিত। পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে আপনি নিম্নলিখিত ধরণের মন্তব্য করতে পারেন:
সাধারণ সমবেদনা প্রকাশ:
"আমি খুব দুঃখিত, আপনার এই কষ্টের সময় আমি আপনাদের পাশে আছি।"
"আপনার প্রিয়জনের চলে যাওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। আল্লাহ/সৃষ্টিকর্তা তাকে শান্তি দিন।"
"আমাদের হৃদয় আপনার সঙ্গে আছে। এই কঠিন সময়ে আমরা আপনার পাশে আছি।"
ধর্মীয় অনুভূতি অনুযায়ী (যদি প্রাসঙ্গিক হয়):
ইসলাম ধর্ম অনুসারে বলা হয়: "ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নাইলাইহি রাজিউন। আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করুন।"
Maytheir soul rest in peace বলা হয়ে থাকে ধর্ম খ্রিস্টান অনুযায়ী
হিন্দু ধর্ম অনুসারে বলা হয়: "ওঁ শান্তি। ভগবান তার আত্মাকে শান্তি দিন।"
ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ:
"তিনি ছিলেন একজন অসাধারণ মানুষ, তার অভাব সবসময় অনুভূত হবে।"
"তার সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো মনে থাকবে, তিনি সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ী ছিলেন।"
পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা:
"আপনাদের জন্য আমার অন্তর থেকে সমবেদনা রইল। আপনারা শক্ত থাকুন।"
"যদি আপনাদের কোনো সাহায্যের প্রয়োজন হয়, নির্দ্বিধায় বলবেন।"
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, কথা যেন সহানুভূতিশীল ও যথাযথ হয়, যাতে শোকাহত ব্যক্তি সামান্য হলেও সান্ত্বনা পায়।
কারো মৃত্যু সংবাদ শুনলে প্রথমে নিজেকে সামলিয়ে নেবার চেষ্টা করুন, তারপর সেই পরিবারকে সান্ত্বনা দেবার পাশাপাশি তাদের সর্বদা খোঁজ খবর রাখুন এবং সেই মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে বলুন এ সৃষ্টিকর্তা তিনি যেন স্বর্গবাসী হন।
Best writing
how are you
thanks for information