একাদশী ব্রত পালনের নিয়ম

একাদশী একটি চান্দ্র তিথি,পদ্মপূরাণে একাদশী প্রসঙ্গে বলা হয়েছে। একাদশী হল হিন্দু ধর্মের একটি পবিত্র উপবাস দিবস, যা চন্দ্র মাসের প্রতি পক্ষের একাদশতম (১১তম) দিনে পালিত হয়। প্রতি চন্দ্র মাসে দুটি একাদশী হয়—একটি শুক্লপক্ষের (পূর্ণিমার আগে) এবং অন্যটি কৃষ্ণপক্ষের (অমাবস্যার আগে)।  একাদশী উপবাস ও ভক্তির সঙ্গে পালন করা হয় এবং এটি সাধারণত বিষ্ণুর উপাসনার সঙ্গে যুক্ত। বিশ্বাস করা হয় যে এই দিনে উপবাস ও প্রার্থনা করলে পাপমোচন হয় এবং আত্মিক উন্নতি সাধিত হয়। কিছু জনপ্রিয় একাদশীর মধ্যে রয়েছে:  নির্জলা একাদশী – সবচেয়ে কঠোর একাদশী, যেখানে জলসহ সম্পূর্ণ উপবাস পালন করা হয়।  পাপমোচনী একাদশী – পাপ মোচনের জন্য পরিচিত।  কামদা একাদশী – ইচ্ছাপূরণের জন্য পালন করা হয়।  বৈকুণ্ঠ একাদশী – এই দিনে ভগবান বিষ্ণুর কৃপা লাভ করা যায় বলে বিশ্বাস করা হয়।

একাদশী ব্রত hd
একাদশী ব্রত


একাদশী ব্রতের ধর্মীয় ইতিহাস

এক সময় ঋষি জৈমিনি তাঁর প্রিয় গুরুদেব মহর্ষি ব্যাসদেবকে একান্ত ভক্তিভরে প্রশ্ন করলেন , হে গুরুদেব! একাদশী কী? একাদশীতে কেন উপবাস করা হয়? একাদশী ব্রত পালন করলে কী লাভ হয়? একাদশী ব্রত না করলে কী ক্ষতি হয়? এই সব বিষয়ে দয়া করে আমাকে বিস্তারিত বলুন,” —এমনি করেই ঋষি জৈমিনি তাঁর প্রিয় গুরুদেব মহর্ষি ব্যাসদেবের শরণাপন্ন হয়ে একান্তভাবে অনুরোধ করেন।তখন মহর্ষি ব্যাসদেব ধ্যানস্থ চিত্তে বলতে শুরু করলেন—"সৃষ্টির সূচনাকালে পরমেশ্বর ভগবান এই জড়জগতের স্থাবর ও জঙ্গম প্রাণীদের সৃষ্টি করলেন। জীবদের কর্ম ও আচরণের শাসন বিধান করার জন্য তিনি এক বিশেষ শক্তির সৃষ্টি করেন—যার নাম ‘পাপপুরুষ’। এই পাপপুরুষের মাধ্যমে মানবজাতির দুঃকর্মের ফল তাদের জীবনে প্রতিফলিত হয়, যাতে তারা সৎপথে প্রত্যাবর্তনের শিক্ষা লাভ করে। বিভিন্ন রকম পাপ দিয়ে তৈরি সেই পাপ পুরুষের অঙ্গ গুলি হয়ে থাকে।পাপপুরুষের মাথাটি ব্রহ্মহত্যা পাপ দিয়ে, চক্ষুদুটি মদ্যপান, মুখ স্বর্ণ অপহরণ, দুই কর্ণ-ণ্ডরুপত্নী গমন, দুই নাসিকা-স্ত্রীহত্যা, দুই বাছ-গোহত্যা পাপ, গ্রীবা-ধন অপহরণ, গলদেশ-ভ্রুণহত্যা, বক্ষ-পরস্ত্রী-গমন, উদর-আত্মীয়স্বজন বধ, নাভি-;শরণাগত বধ, কোমর-আত্মশ্লাঘা, দুই ঊরু-ণ্ডরুনিন্দা,কন্যা শিশু বিক্রি, দুই পা পিতৃহত্যা, মলদার গুপ্ত কথা প্রকাশ পাপ, শরীরের রোম সমস্ত উপপাতক। কাপুরুষসুলভ ভয়ঙ্কর রূপে সেই পাপপুরুষকে দেখে স্বয়ং ভগবান শ্রীবিষ্ণু গভীর চিন্তায় নিমগ্ন হলেন—কীভাবে মর্ত্যের মানুষদের এই ভয়াবহ পাপ থেকে মুক্ত করা যায়। শিশ্ন ও কন্যা বিক্রয়, মলদ্বার ও যৌনঅঙ্গ সংক্রান্ত কুপ্রচার, দুই পা দ্বারা পিতৃহত্যা, শরীরের রোমে জন্মগ্রহণকারী উপপাতক—এ সমস্ত পাপের প্রতিচ্ছবি থেকেই ‘পাপপুরুষ’-এর সৃষ্টি হয়। এই রূপ অতীব ভয়ঙ্কর ও জঘন্য। পাপপুরুষের এমন বিভীষিকাময় দর্শনে শ্রীবিষ্ণু এবং শ্রীকৃষ্ণ উভয়েই মর্ত্যের মানবজাতির পাপক্ষয় ও দুঃখ মোচনের উপায় নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে শুরু করেন। এই প্রসঙ্গেই সূচিত হয় একাদশী তিথির মাহাত্ম্য। চাঁদের শুক্ল ও কৃষ্ণ পক্ষের একাদশী হিন্দু ধর্মে এক বিশেষ পুণ্যতিথি হিসেবে গণ্য। লিঙ্গ নির্বিশেষে যে কেউ এই ব্রত পালন করতে পারেন। একাদশী তিথিতে সাধারণত ফল, সবজি ও দুধ গ্রহণ করা যায়, তবে পঞ্চরবি শস্য (ধান, গম, যব, মসুর ও ছোলা) বর্জন করাই বিধিসম্মত। আষাঢ়, ভাদ্র ও কার্তিক মাসের শুক্ল পক্ষের একাদশীগুলি যথাক্রমে শ্রীবিষ্ণুর শয়ন, পার্শ্ব পরিবর্তন ও জাগরণ উপলক্ষে বিশেষ পুণ্যময় ও শুভপ্রদ বলে বিবেচিত হয়। এছাড়া বৈমী একাদশী ও মাঘ মাসের শুক্ল একাদশীও অত্যন্ত মাহাত্ম্যপূর্ণ। নিয়মিত একাদশী ব্রত পালন কেবল ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, স্বাস্থ্যগত দিক থেকেও উপকারী। অনেকেই তাই আত্মিক শুদ্ধি ও শারীরিক উপকারার্থে প্রতি মাসে দুটি একাদশী ব্রত পালন করে থাকেন।

একদিন গরুড়ের পিঠে চড়ে ভগবান শ্রীহরি যমরাজের মন্দিরে গমন করলেন। যমরাজ ভগবানকে স্বর্ণসিংহাসনে বসিয়ে পাদ্য, অর্ঘ্য দিয়ে যথাবিধি পূজা করলেন। কথোপকথনের সময় ভগবান দক্ষিণ দিক থেকে অসংখ্য জীবের আর্তচিৎকার শুনতে পেলেন। তিনি প্রশ্ন করলেন, "এ আর্তনাদ কেন?" যমরাজ উত্তর দিলেন, "প্রভু, মর্ত্যের পাপী মানুষেরা নিজ কর্মদোষে নরকযন্ত্রণা ভোগ করছে। তাদের যাতনার চিৎকারই শোনা যাচ্ছে।" ভগবান করুণাময় হৃদয়ে সেই পাপীদের দর্শন করে চিন্তা করলেন, "আমিই তো সকল প্রজা সৃষ্টি করেছি। আমার সামনেই তারা পাপের শাস্তি ভোগ করছে। এখন আমিই তাদের মুক্তির পথ দেখাব।" তখন শ্রীহরি একাদশী তিথিরূপে দেবীমূর্তিতে প্রকাশিত হয়ে সেই পাপীদের সামনে আবির্ভূত হলেন। তিনি তাদের একাদশী ব্রত পালন করালেন। ব্রতের প্রভাবে তারা সকল পাপ থেকে মুক্ত হয়ে তৎক্ষণাৎ বৈকুণ্ঠধামে গমন করল। শ্রীব্যাসদেব জৈমিনিকে বললেন, "শোন, একাদশী ব্রত সমস্ত পুণ্যকর্মের শীর্ষে অবস্থিত। এটি শ্রীহরিরই স্বরূপ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ ব্রত।" কিছুদিন পর, ভগবানের সৃষ্টি 'পাপপুরুষ' করজোড়ে তাঁর কাছে আবেদন জানাল, "হে প্রভু! আমি আপনারই আদেশে পাপীদের শাস্তি দিতাম। কিন্তু একাদশীর প্রভাবে এখন আমি নির্ব । পাপীরা বৈকুণ্ঠে চলে যাচ্ছে, আমার অস্তিত্বই বিপন্ন। যদি আপনার এই বিশ্বে লীলা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা থাকে, তবে একাদশীর ভয় থেকে আমাকে রক্ষা করুন! আমি কোথাও আশ্রয় পাচ্ছি না—স্বর্গ, মর্ত্য, পাতাল, পশু-পাখী, নদী-পর্বত, সবখানেই একাদশীর প্রভাব। হে কৈটভনাশন, আমাকে রক্ষা করুন! হে ভগবান! এখন আমি উপলব্ধি করছি—আপনার অসীম সৃষ্টিজগতে, অনন্ত কোটি ব্রহ্মাণ্ডে একাদশী তিথিই সর্বাধিক গৌরব ও পবিত্রতার অধিকারী হয়েছে। ফলে আমি কোথাও আশ্রয় খুঁজে পাচ্ছি না। হে প্রভু! দয়া করে আমাকে একটিমাত্র নিরাপদ আশ্রয় দিন, যেখানে আমি নির্ভয়ে অবস্থান করতে পারি। আপনার করুণাই আমার একমাত্র ভরসা। এই কথার প্রেক্ষিতে পাপ পুরুষের বিনয় প্রার্থনা শুনে শ্রী হরি ভগবান বলতে লাগলেন হে পাপ পুরুষ তুমি কেন দুঃখ কর, তুমি দুঃখ করো না। যখনই একাদশী এই পৃথিবীতে পবিত্র করতে আবির্ভূত হবেন, তখন তুমি রবিশস্য ও অম্ল এই দুটি উপদানের মধ্যে আশ্রয় গ্রহণ করবে তাহলেই দেখবে আমার মুর্তি একাদশী তোমাকে কখনোই বোধ করতে পারবে না। একাদশ্যাং নিরাহারো ব্রতেনানেন কেশব। প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব।।”  – এই মন্ত্র পাঠ করে নির্দিষট সময়ের মাঝে পারন করতে হয়। • গীতা মাহাত্ম্যে উল্লেখ আছে- ” যোহধীতে বিষ্ণুপর্বাহে -গীতাং- শ্রীহরি-বাসরে। স্বপন জাগ্রৎ চলন- তিষ্ঠন শত্রুভির্ন -স হীয়তে।। অর্থাৎ যে ভক্ত শ্রীবিষ্ণুর পর্বতিথিতে, বিশেষত একাদশী ও জন্মাষ্টমীতে ভক্তিভরে ভাগবদ্গীতা পাঠ করেন, তিনি চলতে ফিরতেই হোন কিংবা অবস্থান করুন নিদ্রায় বা জাগরণে—যে অবস্থাতেই থাকুন না কেন, কোনও শত্রুই তার কোনও অমঙ্গল সাধন করতে পারে না। যদিও শাস্ত্রবিধি অনুসারে একাদশী পালনেই শ্রেষ্ঠ ফল লাভ হয়, তথাপি অনেকে মহাপুরুষের আদর্শ বা বিভিন্ন ধর্মীয় মত অনুসরণ করেও এই ব্রত পালন করেন। ফলে আচরণ ও নিয়মাবলীতে এবং ব্রত পালনের সময়ে কিছু পার্থক্য সুস্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যায়, যা মূল সাত্ত্বিক নিয়মের তুলনায় কিছুটা ব্যতিক্রম। একাদশীর মূল কাজ হল– নিরন্তর ভগবানকে স্মরণ করা । তাই আপনারা যে বৈষ্ণব বা সাত্ত্বিক যে উপায়ই পালন করুন না কেন, পালন করার মুহূর্তে ভক্তি ভরে ভগবানকেই স্মরণ করা আপনাদের মূল কাজ হয় যেন। 
আমরা একাদশী পালনের সাত্ত্বিক নিয়মটি উল্লেখ করছি । এটি পালন করা সবার উচিত । 
একাদশী পালনের সঠিক নিয়ম গুলো কি কি? What are the correct rules for celebrating Ekadashi?
১।আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী দশমীতে একাহার ও একাদশীতে নিরাহার এবং দাদা হিতে এক কাহার করবেন। 
২। তা হতে অসমর্থ পক্ষে  একাদশীতে অনাহার শুধুমাত্র। 
৩। যদি এতে অক্ষম হন, তবে একাদশী ব্রত পালনে পঞ্চ রবিশস্য বর্জন করে ফলমূল গ্রহণের বিধান রয়েছে। যারা সক্ষম, তাদের জন্য রাত জাগরণের নিয়ম রয়েছে। গোড়ীয় ধারায় বা মহাপুরাণী আচার্য্যবৃন্দের অনুমোদিত পঞ্জিকায় যে সকল একাদশী নির্জলা (জল ছাড়া) ব্রত পালনের নির্দেশ দিয়েছেন, সেগুলিও অনুসরণ করা উচিত। সেগুলি সেমতে করলে সর্বোওম হয় । নিরন্তর কৃষ্ণভাবনায় থেকে নিরাহার থাকতে অপারগ হলে নির্জলাসহ অন্যান্য একাদশীতে কিছু — ফলমূলাদি, সবজি , গ্রহণ করতে পারেন। 
নিচে একাদশী ব্রতের সময়ে খাওয়া যেতে পারে এমন ফলমূলের একটি তালিকা দেওয়া হলো:

কলা,আপেল,পেঁপে,আনারস,আমড়া,আঙ্গুর,তরমুজ,বেল,নারিকেল,মিষ্টি আলু,শসা,পীচ,প্লাম,কিশমিশ

এই ফলগুলো সাধারনত একাদশীতে গ্রহণযোগ্য হলেও, প্রতিটি অঞ্চলের এবং ধর্মীয় মত অনুসারে কিছু পার্থক্য থাকতে পারে।

একাদশীতে পাচঁ (5) প্রকার রবিশস্য গ্রহণ নিষেধ করা হয়েছেঃ—- 

১। ধান(paddy) জাতীয় সকল প্রকার খাদ্য যেমন – চাউল, চাউলের পিঠা,মুড়ি, চিড়া, সুজি, পায়েশ, খিচুড়ি, খৈ ইত্যাদি 
২। গম জাতীয় সকল প্রকার খাদ্য যেমন – আটা,ময়দা, সুজি , বেকারীর রূটি , বা সকল প্রকার বিস্কুট ,হরলিকস্ জাতীয় ইত্যাদি । 
৩। ছাতু, খই, রুটি—এই সকল খাদ্যবস্তু যেমন যব, ভূট্টা বা অনুরূপ শস্যজাতীয় সকল প্রকার খাদ্য একাদশীতে বর্জনীয়।
৪। সরিষার তেল, সয়াবিন তেল, তিল তেল ইত্যাদি পঞ্চ রবিশস্যের যে কোনো একটি একাদশীতে গ্রহণ করলে ব্রত ভঙ্গ হয়ে যায়।
6.ডাল জাতীয় সকল প্রকার খাদ্য যেমন — মুগ মাসকলাই , খেসারী , মসুরী, ছোলা অড়রহ , ফেলন, মটরশুটি, বরবঢী ও সিম ইত্যাদি । ।
উল্লেখ্য যারা সাত্ত্বিক আহারী নন এবং চা, বিড়ি/সিগারেট, কফি বা অন্য কোনো নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করেন, তাদের জন্য একাদশী ব্রত পালনের সময় এসব থেকে বিরত থাকা উচিত। ব্রত পালন করলে শুধুমাত্র নিজের আত্মিক কল্যাণ সাধিত হয়—এমনটি নয়; বরং এই ব্রতের ফলে ব্যক্তি নিজে যেমন পুণ্যলাভ করেন, তেমনই যদি তাঁর প্রয়াত পিতা-মাতা নরকবাসে অবস্থান করেন, তবে সন্তানের এই ব্রত পালন তাদের নরকযন্ত্রণা থেকে মুক্তির পথ করে দেয়। আবার একাদশী তিথিতে নিজে অন্নগ্রহণ করলে যেমন পাপফল ভোগ করতে হয়, তেমনি অন্য কাউকে অন্ন ভোজন করালেও সেই পাপের ভাগী হতে হয়। অতএব, একাদশী ব্রত পালন আমাদের সকলেরই ধর্মীয় কর্তব্য। তবে শুধু উপবাস করলেই এই ব্রতের পূর্ণফল লাভ হয় না—এর যথাযথ পারণও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একাদশী তিথির পরদিন, অর্থাৎ দ্বাদশী সকালে, পঞ্জিকায় নির্ধারিত 'পারণকাল'-এর মধ্যেই উপবাস ভঙ্গ করতে হয়। পারণ করার সময় পঞ্চ রবিশস্য ভগবানের উদ্দেশ্যে নিবেদন করে তারপর প্রসাদ গ্রহণ করা বিধিসম্মত। নির্ধারিত সময় অতিক্রম করে পারণ করলে একাদশী ব্রতের ফল লাভ হয় না। মনে রাখতে হবে, একাদশী ব্রতের মূল উদ্দেশ্য কেবল অন্নবর্জন নয়, বরং সেই দিনটি শ্রীভগবানের চরণে একাগ্রতা সহকারে নাম-স্মরণ, মনন, শ্রবণ ও কীর্তনে নিবিষ্ট হয়ে অতিবাহিত করাই শ্রেয়। একাদশী ব্রত পালনের সময়ে যতটা সম্ভব ক্রোধ, দুরাচার, পরনিন্দা, গোপন চর্চা, মিথ্যাভাষণ এবং স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।

বিঃ দ্রঃ নিমোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি দৃষ্টি রাখা বাঞ্ছনীয়ঃ — একাদশী ব্রত পালনের জন্য সর্বোত্তম হলো—ব্রতের আগের দিন, অর্থাৎ দশমী তিথিতে রাত ১২টার পূর্বেই অন্নভোজন সম্পন্ন করা। রাতে ঘুমানোর আগে ভালোভাবে দাঁত মেজে মুখগহ্বরের সব খাদ্যকণা পরিষ্কার করে নেওয়া উচিত। একাদশীর সকালে কেবল মুখ ধুয়ে স্নান করতে হয়।

এই পবিত্র তিথিতে সবজি কাটার সময় অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে, যেন কোথাও শরীরে কেটে না যায়, কারণ একাদশীতে রক্তপাত সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। দাঁত ব্রাশ করার সময় অনেকের মাড়ি থেকে রক্ত পড়ে, তাই একাদশীর আগের দিনই দাঁত ভালোভাবে ব্রাশ করে নেওয়াই বিধেয়। এদিন একাদশীর মাহাত্ম্য শোনা বা পাঠ করাও একাধিক পুণ্যের কাজ। যদি সম্ভব হয়, কোনো ভগবদ্ভক্তের মুখ থেকে শ্রবণ করুন; তা না হলে নিজেই ভক্তিভরে পাঠ করুন। যাঁরা একাদশীর প্রসাদ রান্না করেন, তাঁদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে ‘পাঁচফোড়ন’ ব্যবহারের ক্ষেত্রে, কারণ তাতে সরিষা বা তিল থাকতে পারে, যা এই ব্রতে নিষিদ্ধ। একাদশী তিথিতে শরীরে প্রসাধনী বা সুগন্ধি দ্রব্য যেমন—তৈল, সুগন্ধি সাবান, শ্যাম্পু, মাথায় তেল প্রভৃতি ব্যবহার নিষিদ্ধ। একইভাবে সকল প্রকার ক্ষৌরকর্ম—যেমন দাড়ি শেভ করা, চুল কাটা ও নখ ছাঁটা থেকেও বিরত থাকা উচিত।  ভূল   ত্রুটি  হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

NB:পূর্ণিমা এবং অমাবস্যার ঠিক পরে একাদশতম দিনটি হল একাদশী। ওই দিনটিতে খাবার না খেলে এবং সতর্ক থাকলে, আপনার সচেতনতা অন্তর্মুখী হবে।~সদগুরু  

উপবাস রাখো খাবারের

খারাপ কিছু না দেখার।

খারাপ কিছু না বলার। খারাপ কিছু না শোনার।

খারাপ কিছু না ভাবার। MS

Comments