মা কালীর ১০৮টি নাম (অষ্টোত্তর শতনাম) - কালীপূজার মন্ত্র, অর্থ ও মহিমা

শ্রীশ্রী কালীর অষ্টোত্তর শতনাম মানে মা কালীর ১০৮টি নাম। এগুলো কালীপূজার সময় বা কালীমন্ত্র পড়ার সময় বলা হয়। এই নামগুলো মায়ের বিভিন্ন রূপ আর শক্তির প্রকাশ করে। এখানে কিছু নাম দেয়া হলো:

অষ্টোত্তর শতনাম

শ্রীশ্রীকালীর অষ্টোত্তর শতনাম
করালিনী কালী মাগো কৈবল্যদায়িনী | ১
জগদম্বা নামে তুমি বিমুক্তকারিনী || ২
দুঃখনাশ কর বলি হলে দুঃখহরা | ৩
জগতের মাতা তুমি হর মনোহরা || ৪
বিপদে রেখো মা কোলে ওগো হরজায়া | ৫
মায়া বিস্তারিয়া মাগো হলে মহামায়া || ৬
মৃগনেত্র সম বলি কুরঙ্গনয়নী | ৭
মাঝের যুদ্ধের চরম ক্ষণে, মা চন্ডী যেন প্রমাণ করলেন নিজের শক্তির|| ৮
শঙ্করের জায়া বলি হলে মা শঙ্করী  | ৯
ভব জায়া বলি তুমি ভবানী ঈশ্বরী || ১০
কালীর অষ্টোত্তর শতনাম pdf
কালীর অষ্টোত্তর শতনাম


ভীষণ আনন বলি করালবদনী | ১১
দীনহীনে কর দয়া দনুজদলনী || ১২
কৃত্তিবাস হলে মাগো বাগছাল পরি | ১৩
 কৃত্তিবাস দারা তাই তুমি মা শঙ্করী || ১৪
পাপ বিনাশিনী কালী নৃমুন্ডমালিনী  | ১৫
অধীনে কর মা দয়া তুমি কাত্যায়নী  || ১৬
কুলকুন্ডলিনী মাগো তুমি মহাসতী | ১৭
ষড়ৈশ্বর্য্যময়ী বলি নাম ভগবতী  || ১৮
জগত-জননী মাগো কালী কপালিনী  | ১৯
কটিতে ঘুঙ্গুর পরি হলে মা কিঙ্কিনী  || ২০
দনুজ দলন করি দনুজদলনী  | ২১
দুর্গতিনাশিনী তুমি দেবী নারায়ণী  || ২২
দুর্গাসুরবধ করি দুর্গা নামে খ্যাতা  | ২৩
ত্রিলোচনী তুমি মাগো জগতের মাতা || ২৪
 তারা নাম' ধর তুমি মাতা মুক্তি করি  | ২৫
শ্রীতুমি তারিণী, তোমার নামেই সারা জগত রক্ষা হয় || ২৬
পূর্ণব্রহ্মময়ী তুমি ব্রহ্মসনাতনী  | ২৭
পরমা প্রকৃতি তুমি সৃজনকারিণী  || ২৮
বেদের সৃজন করি হলে বেদমাতা | ২৯
যোগমায়া নামে তুমি ত্রিলোকপালিতা  || ৩০
রুদ্রের ঘরণী বলি হলে রুদ্রজায়া  | ৩১
অম্বিকা নামেতে তুমি হলে মহামায়া  || ৩২
অপর্ণা তুমি মা কালী ত্রিলোকতারিণী  | ৩৩
অন্নপূর্ণা তুমি মাতা ত্রিলোকপালিনী || ৩৪
শঙ্কর কপালে ধরে হলে মহাকালী  | ৩৫
কারণপ্রিয়া মা তুমি করণকারিকা  || ৩৬
এ দীনে কর গো দয়া তুমি মা কালিকা | ৩৭
থাকে না কালের ভয় তোমার শরণে  |
কালক্ষয়-বিনাশিনী তাই লোকে ভণে  || ৩৮
মেঘের বরণ তাই হলে কাদম্বিনী |
কপালকুন্তলা কুন্দকুসুমধারিণী  || ৩৯
জগতের আদি বলি নাম আদ্যাশক্তি |
অভয় চরণে যেন থাকে সদা ভক্তি || ৪০
মহাবিদ্যা মহামায়া তুমি করলিনী  || ৪২
কালী করালিনী তুমি প্রজাপতি মাতা   ||৪
হলে মা তুমি কৌশিকী নিজ কায় কোষ বলি  |
তোমার মায়ায় মুগ্ধ জগতের ভৌতিকী  || ৪৩
ময়ূরবাহনে সাজ তুমি মা কৌমারী  | ৪৪
তুমি মা কাবেরী কালিকে কুটিলা দুর্গে || ৪৫
কালভয় নাশ কর তুমি কালপ্রিয়া |
তোমার অনন্ত লীলা মানব অজ্ঞেয়া || ৪৬
মায়া বিস্তারিয়া মাগো হলে মহামায়া |
বিপদে রেখো মা কোলে ওগো হরজায়া ||৪৭
তপোময়ী তুমি মাতা দানবদলনী |
ত্রিলোচন ত্রাণকর্ত্রী ত্রিলোকপালিনী  || ৪৮
তত্ত্বপরায়নী তুমি সর্ব্বসিদ্ধি দাত্রী  |
জগত-পালন হেতু তুমি জগদ্ধাত্রী  || ৪৯
দানিয়া সারূপ্যমুক্তি হলে নারায়ণী |
ত্রিবলী ধারিণী দুর্গে গুরু নিতম্বিনী || ৫০
ত্রিপুর দলনী দেবী লজ্জাস্বরূপিনী  | ৫১
মহিষ অসুর বধি মহিষমর্দ্দিনী  || ৫২
জয় মাতঃ ত্রিনয়নী ত্রিফল স্বরূপা  |
জননী মাতা  তাপিনী অনুপা লম্বোদর || ৫৩
ত্রিলোক পালিনী তুমি সর্ব্বপাপ হরা  |
ত্রিশূলধারিণী কালী অর্দ্ধেন্দুশেখরা || ৫৪
সদাই ষোড়শী তাই হইলে ষোড়শী | ৫৫
অন্নপূর্ণা নামে তুমি থাকো বারানসী  || ৫৬
বরন্যে বরদা সর্ব্বমঙ্গলা শিবানী  |
সর্ব্বেশ্বরী সর্ব্বধাত্রী ত্রিগুণ ধারিণী  || ৫৭
শঙ্করের প্রিয়া তাই নাম ভবদারা | ৫৮
কামাখ্যা কমলা তুমি ভবদুঃখহরা || ৫৯
শান্তিবিধায়িনী তুমি মহারুদ্রপ্রিয়া  |
বধি শুম্ভ-নিশম্ভাদি হইলে অজেয়া || ৬০
কামদাত্রী নামে তুমি কামনা পুরাও | ৬১
মহেশ্বরী নামে তুমি ভববক্ষে রও  || ৬২
কাল কাদম্বরী মাগো রাজ-রাজেশ্বরী |
ত্রিপুর-নাশিনী তুমি ত্রিপুরসুন্দরী  || ৬৩
করুণাক্ষী হলে তুমি বিতরি করুণা |
দীনহীনে কর দয়া অনন্ত-নয়না || ৬৪
ঈশান মহিষী তাই হইতে ঈশানী  | ৬৫
চন্ডমুন্ড বধ করি চামুন্ডারূপিণী  || ৬৬
ত্রিলোকের অধিষ্ঠাত্রী ত্রিলোক-ঈশ্বরী |
ত্রাণকর্ত্রী ত্রিনয়না ত্রিপুরাসুন্দরী  || ৬৭
তুমি তৃষ্ণা, তুমি ক্ষুদা  বুদ্ধি স্বরূপিণী  | ৬৮
ইতি ত্রিগুণধারিণী সত্ত্ব রজঃ তমঃ   || ৬৯
সাবিত্রী তুমি মা তারা মুক্তিবিধায়িণী  |
শোক দুঃখ বিনাশিনী তুমি মা সর্ব্বানী  || ৭০
অশিবনাশিনী কালী দুর্গতিনাশিনী  |
ভগবতী সুরেশ্বরী অসুরঘাতিনী  || ৭১
সহস্রাক্ষী সপ্তসতী শঙ্করী-ঈশ্বরী | ৭২
বিদ্যাদাত্রী সুখপ্রদা তুমি শাকম্ভরী  || ৭৩
শবোপরি উপবিষ্টা সরোজ বাসিনী  |
ভূতপ্রেত সঙ্গিনী মা শ্মশান বাসিনী || ৭৪
ধর্ম্ম-অর্থ-কাম মোক্ষফল-বিধায়িনী |
তুমি মা কালীকে দুর্গে শ্রীকৃষ্ণ-জননী || ৭৫
অসুরাদি বধে দেবী রণ উন্মাদিনী |
সহস্রলোচনী তারা দেবেন্দ্র জননী || ৭৬
কর মা করুণা দীনে দনুজদলনী |
সুভগা সুমুখী শিবা তুমি ত্রিলাচনী  || ৭৭
কলুষনাশিনী তুমি তারা মুকতিদায়িনী |
সুবচনী তুমি তারা মোচনকারিণী  || ৭৮
ধনদাত্রী ধনহারা ধর্ম্ম বিধায়িনী  | ৭৯
বগলা তুমি মা তারা সুবুদ্ধিদায়িনী  || ৮০
মাতঙ্গী তুমি মা তারা ত্রিলোকপালিনী | ৮১
বিশ্বময়ী মহেশ্বরী মলয়বাহিনী  || ৮২
ক্ষীণোদর বলি মাগো বলে মন্দোদরী  |
দীনহীনে কর কৃপা তুমি মহেশ্বরী  || ৮৩
মধু আর কৈটভেরে করিয়া সংহার |
মধুকৈটভনাশিনী নাম যে তোমার || ৮৪
লক্ষ্মীস্বরূপিনী তুমি, তুমি মা কমলা |
কুরুকুল্লা কপালিনী তুমি মা চঞ্চলা  || ৮৫
বয়সে কিশোর সদা তাই মা কিশোরী |
পীনোন্নত পয়োধরা কুমারী শঙ্করী  || ৮৬
গিরিরাজসূতা সতী কৈলাসবাসিনী | ৮৭
কল্যাণদায়িনী সদা তাই মা কল্যাণী || ৮৮
গনেশ-জননী তুমি গিরিশ-নন্দিনী  | ৮৯
হরমনোহরা রমা গিরীশমোহিনী || ৯০
শারদা শরতপ্রিয়া শিব সনাতনী  | ৯১
বসুন্ধরা জগন্মাতা বরদা বারুণী  || ৯২
বিশ্বমাতা বিশ্বময়ী তুমি এলোকেশী  | ৯৩
অ-কিঞ্চনে কর দয়া ওগো ব্যোমকেশী  || ৯৪
মা তুমি বহুরূপিনী বহু রূপ ধর বলি  |
রণেতে দুর্জ্জয় মাগো দৈত্য বিনাশিনী  || ৯৫
ভিক্ষুক-গৃহিনী সাজ তাই মা ভিক্ষুকী | ৯৬
ত্রিনয়নী মুক্তকেশী ভারতী কৌশিকী  || ৯৭
সৃষ্টিসংহারিণী কালী তুমি ছত্রেশ্বরী  |
প্রলয়ে কর মা সৃষ্টি তুমি মহেশ্বরী || ৯৮
নিজ মুন্ড করি ছিন্ন হলে ছিন্নমস্তা |
কাতরে অভয়দানে হও ব্যগ্রহস্তা  || ৯৯
ছলনা করিয়ে তুমি হলে ছলবতী  |
গিরিরাজ-সুতা তুমি দেবী হৈমবতী || ১০০
শ্রীফলী তোমার নাম ধাত্রীফলপ্রিয়া | ১০১
শ্রীনিকেতনী নামেতে হলে বিষ্ণুপ্রিয়া || ১০২
ধূসর বরণে তুমি হও ধূমাবতী  |
মহাবিদ্যা রূপেভেদে তুমি মহাসতী  || ১০৩
ধূম্রাক্ষনাশিনী তুমি হরের মোহিনী  |
দীনহীনে কর দয়া তুমি নারায়ণী  || ১০৪
ধানসী ধরিত্রী দেবী তুমি কাত্যায়নী  | ১০৫
হরমনোহরা রমা ধূর্জ্জটিমোহিনী || ১০৬
গনেশ জননী তুমি গিরিশ নন্দিনী | ১০৭
গিরীশ মোহিনী তুমি হর 'মনোহরা রমা   || ১০৮   

অষ্টোত্তর শতনাম হল সমাপন।
আনন্দেতে কালীস্তুতি কর সর্বজন ।।
ভক্তিভাবে এই নাম যে করে পঠন।
অনন্ত মহিমাময় কালী শতনাম।।
ধনরত্নে তার গৃহ হই
শ্রবণে পঠনে হয় নির্ধনের ধন।।
অন্তিমে কালীর পদ পায় সেই জন।।

কালীর ১০৮টি নাম  

  • কালিকা (Kālīka)

  • কালিমাতা (Kālīmātā)

  • কালিকামহাকালী (Kālikāmaḥākālī)

  • কালরাত্রি (Kālarātri)

  • মহাকালী (Mahākālī)

  • শ্বেতকালী (Śvetakālī)

  • চণ্ডী (Caṇḍī)

  • চামুণ্ডা (Cāmuṇḍā)

  • দুর্গা (Durga)

  • ভবানী (Bhavanī)

  • রুদ্রকালী (Rudrakālī)

  • বর্ধমানী (Bardhamānī)

  • ভৈরবী (Bhairavī)

  • মহামায়া (Mahāmāyā)

  • মহাশক্তি (Mahāśakti)

  • মহাভৈরবী (Mahābhairavī)

  • কালীদূতি (Kālīdūti)

  • কালপূজা (Kālīpūjā)

  • বুদ্ধিপূজা (Buddhipūjā)

  • মহাচণ্ডিকা (Mahācaṇḍikā)

  • শক্তিদাত্রী (Śaktidātrī)

  • কালীশ্বরী (Kālīśvarī)

  • মহাশিবানি (Mahāśivānī)

  • শ্বেতদ্বীপে (Śvetadvīpe)

  • শিতিকালী (Śitikālī)

  • অগ্নিকালী (Agnikālī)

  • রক্তদৃষ্টি (Raktadṛṣṭi)

  • ভ্রমরাকালী (Bhramarākālī)

  • দেবীভাদ্রী (Debībhādrī)

  • শ্রীরূপা (Śrīrūpā)

  • রণকালিকা (Raṇakālīkā)

  • বীথিপালিনী (Bīthipālinī)

  • যমুনাকালী (Yamunākālī)

  • দুষ্টপদলাবিনী (Duṣṭapadalābinī)

  • ভূতপ্রেতনাথিনী (Bhūtapretanāthinī)

  • তরলকালী (Tarakalī)

  • অমৃতকালী (Amṛtakālī)

  • কালবৈশালী (Kālavaisālī)

  • বিদ্যারূপা (Vidārūpā)

  • তন্ত্ররাণী (Tantrarāṇī)

  • গৌরী (Gaurī)

  • শিবী (Śivī)

  • বিদ্যাধিকারিণী (Vidyādhikāriṇī)

  • কালবীর (Kālabīr)

  • মহাতাণ্ডবী (Mahātāṇḍabī)

  • দানবী (Dānabhī)

  • যোগমাতা (Yogamātā)

  • শূন্যশক্তি (Śūnyāśakti)

  • তন্ত্রবিজ্ঞানী (Tantrabijñānī)

  • রুদ্ররূপা (Rudrarūpā)

  • বর্ণগা (Barṇagā)

  • সমূর্তিরাণী (Samūrtirāṇī)

  • খৈরভী (Khaīrabhī)

  • আদিকালী (Ādikālī)

  • মহাকোলিকা (Mahākōlikā)

  • জননী (Janānī)

  • বিধাতা (Vidhātā)

  • আশ্রমকালী (Āśramakālī)

  • শক্রবিধ্বংসী (Śakravidḥvaṁsī)

  • স্বর্গনন্দিনী (Svarganandinī)

  • আশিস্বরী (Āśisvarī)

  • নির্গুণী (Nirguṇī)

  • মন্ত্রদাত্রী (Mantradātrī)

  • আকাশকালী (Ākāśakālī)

  • সিদ্ধকালী (Siddhakālī)

  • দন্ডিনী (Daṇḍinī)

  • দম্ভনাশিনী (Dambhanāśinī)

  • চূড়ামণি (Cūḍāmaṇī)

  • রাজমাতা (Rājamātā)

  • মহাবিশালিকা (Mahāviśālikā)

  • যজ্ঞমাতা (Yajñamātā)

  • সার্বজনীনী (Sārvajinīnī)

  • দুঃখনাশিনী (Duḥkhanāśinī)

  • নিত্যকালী (Nityakālī)

  • চক্রকালী (Cakrakālī)

  • রুদ্রদৃষ্টি (Rudradr̥ṣṭi)

  • কামরূপী (Kāmrūpī)

  • গুহ্যতত্ত্ব (Guhyatattva)

  • আদিশক্তি (Ādiśakti)

  • মাতৃরূপা (Mātrūpā)

  • সঙ্কল্পদাত্রী (Saṅkalpadātrī)

  • জ্ঞানরূপা (Jñānarūpā)

  • সহস্রবাহিনী (Sahasrabhāhinī)

  • বীরকালী (Bīrakālī)

  • দয়ারাণী (Dayārāṇī)

  • কালধ্বংসিনী (Kāladḥvaṁsinī)

  • মহাশক্তিরূপা (Mahāśaktirūpā)

  • শক্তি রূপিনী (Śakti rūpīnā)

  • কৃষ্ণকালী (Kṛṣṇakālī)

  • মৈত্রীরূপা (Maitrīrūpā)

  • মনোহরী (Monoharī)

  • জ্বালারূপা (Jwālarūpā)

  • সৌম্যকালী (Saumyakālī)

  • প্রাণরক্ষিণী (Prāṇarakṣiṇī)

  • পূর্ণকালী (Pūrṇakālī)

  • প্রলয়ী (Pralayī)

  • গুরুমাতা (Gurumātā)

  • দানবী (Dānabhī)

  • কালদূতী (Kāladūtī)

  • মহা রূপা (Mahārūpā)

  • মহাশক্তি (Mahāśakti)

  • কৃষ্ণাণী (Kṛṣhṇāṇī)

  • পার্বতী (Pārvatī)

  • মহাকাল (Mahākāl)

  • ভৈরবী (Bhairavī)

  • মন্ত্রবেদিনী (Mantrabedinī)

  • কৃষ্ণাকালী (Kṛṣṇākālī)

  • শিবশক্তি (Śivashakti)

কালীপূজার মন্ত্র

কালীর ধ্যান:
ওঁ মেঘাঙ্গীং বিগতাম্বরা শবশিবারূঢ়াং ত্রিনেত্রাং পরাম্। কর্ণালম্বিতবালযুগ্মভয়দাং মুণ্ডস্ৰজাং ভীষণাম্ । বামোধোৰ্দ্ধকাম্বুজে নরশিরঃ খড়্গঞ্চ সব্যেতরে। দানাভীতি বিমুক্তকেশনিচয়াং বন্দে সদা কালিকাম্॥

স্তুতি:
তুমি মা চামুণ্ডে ভবতাপহারিণী। জয় সৰ্ব্বক্ষণ তৰ সন্তাপ বারিণী৷৷ জয় মাগো ভদ্রকালী বরাভয়দাত্রী। ক্ষমা প্রদারিনী কালী ত্রিভুবনধাত্রী৷৷ তুমি দুর্গা তুমি শিবা কালী কপালিনী। মধু ও কৈটভ নাশ প্রলয়কারিণী। সৰ্ব্ব মঙ্গলময়ী, সৰ্ব্বার্থ-সাধিকা। প্রলয়কারিণী মাগো অরিকুল-ঘাতিকা ৷৷ মঙ্গলকারিণী শ্যামা দেবী কালরাত্রি। সারদা বরদা তুমি, তুমি মা বিধাত্রী ।

দক্ষিণা কালিকার ধ্যান:

ওঁ করালবদনাং ঘোরাং মুক্তকেশীং চতুর্ভূজান।
কালিকাং দক্ষিণাং দিব্যাং মুণ্ডমালাবিভূষিতাম্।।
সদ্যশ্ছিন্ন শিরঃখড়্গবামাধোৰ্দ্ধকরাম্বুজাম্।
অভয়ং বরদঞ্চৈব দক্ষিণাদ্ধার্ধপাণিকাম্।।
মহামেঘপ্রভাং শ্যামাং তথা চৈব দিগম্বরীম্। কণ্ঠাবসক্তমুণ্ডালী-গলদ্রুধিরচর্চ্চিতাম্।। কর্ণাবতংসতানীতশবযুগ্মভয়ানকাম্।
ঘোরদংস্ট্রাং করালাস্যাং পীনোন্নত পয়োধরাং।
শাবানাং করসংঘাতৈঃ কৃতকাঞ্চীং হসম্মুখীম্।
ক্কদ্বয় গলদ্রভৃধারাবিস্ফুরিতাননাম্।
ঘোররাবাং মহারৌদ্রীং শ্মশানলয়বাসিনীম্। বালাকমণ্ডলাকারলোচনত্রিতয়ান্বিতাম্।।
দস্তুরাঃ দক্ষিণব্যাপিমুক্তালম্বিকচোচ্চয়াম্। শবরূপমহাদেবহৃদয়োপরিসংস্থিতাম্। শিবাভিঘোররাবাভিশ্চতুদিক্ষু সমন্বিতাম্।
মহাকালেন চ সমং বিপরীতরতাতুরাম্।।
সুখপ্রসন্নবদনাং স্মেরাননসরোরুহাম্।
এবং সঞ্চিন্তয়েৎ কালীং সৰ্ব্বকাম-সমৃদ্ধিদাম্ ॥
মন্ত্রঃ ক্রীং-ক্রীং-ক্রীং' হুং -হুং 'হ্রীং হ্রীং দক্ষিণেকালিকে ক্রীং ক্রীং হুং হুং: হ্রীং হ্রীং' স্বাহা।

কালীদেবীর নামের তাৎপর্য

মা কালী বা কালীদেবীর নামের তাৎপর্য অত্যন্ত গভীর এবং বহু মাত্রায় বিস্তৃত। কালীদেবী হিন্দু ধর্মের অন্যতম শক্তিশালী দেবী, যিনি সময়ের স্রষ্টা, সংহারক এবং পুনর্জন্মের সাথে যুক্ত। কালীদেবীর নামের প্রতিটি অক্ষর এবং তাদের আক্ষরিক ও আধ্যাত্মিক তাৎপর্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এখানে কিছু মূল নামের তাৎপর্য তুলে ধরা হলো:

১. কালিকা (Kālīka)
তাৎপর্য: "কালিকা" শব্দটি "কাল" (সময়) থেকে এসেছে। কালীদেবী সবকিছুর শুরু এবং সমাপ্তির প্রতীক। তিনি সময়ের স্রষ্টা, নিয়ন্ত্রী, এবং পৃ্থিবীজুড়ে সৃষ্টির চক্রের প্রাথমিক শক্তি।

২. কালীমাতা (Kālīmātā)
তাৎপর্য: কালীমাতা অর্থাৎ "মা কালী"। এখানে "মা" বা "মাতা" শব্দের মাধ্যমে দেবীকে মা হিসেবে বন্দনা করা হয়, যিনি সব জীবের প্রতিপালিকা এবং পরম দয়ালু।

৩. মহাকালী (Mahākālī)
তাৎপর্য: মহাকালী শব্দটি "মহা" (বিশাল) এবং "কাল" (সময়) থেকে এসেছে, অর্থাৎ তিনি মহা শক্তিশালী, মহা প্রলয়কারিণী, এবং মহা কাল বা সময়ের রূপ।

৪. কালরাত্রি (Kālarātri)
তাৎপর্য: কালরাত্রি শব্দটি মূলত দেবীর এক ভয়ংকর রূপের প্রতি ইঙ্গিত করে। "কালরাত্রি" অর্থ রাতের কাল সময়। তিনি সর্বনাশকারী এবং ভয়ঙ্কর রাত্রির রূপে পরিচিত। কালরাত্রি রূপে দেবী অন্ধকার দূর করে সুরক্ষা প্রদান করেন।

৫. চণ্ডী (Caṇḍī)
তাৎপর্য: "চণ্ডী" নামটি "চণ্ড" (কপালগত রাগ বা ক্রোধ) থেকে এসেছে। চণ্ডী রূপে কালী রাগ এবং ক্রোধের প্রতীক, যা শক্তি এবং দুর্ভেদ্যতা নির্দেশ করে। তিনি অশুভ শক্তির ধ্বংসকারী।

৬. দুর্গা (Durga)
তাৎপর্য: "দুর্গা" নামটি বাংলা শব্দ "দুর্গ" থেকে এসেছে, যা দুর্গ বা দুর্গম স্থান নির্দেশ করে। দুর্গা রূপে কালী অতুলনীয় শক্তির প্রতীক, যিনি সকল বিপদ এবং অশুভ শক্তিকে পরাস্ত করেন। "দুর্গা" শব্দটি দেবীকে একটি অপ্রতিরোধ্য শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করে।

৭. শক্তি (Śakti)
তাৎপর্য: কালীদেবী শক্তির প্রতীক। তিনি পার্থিব এবং আধ্যাত্মিক শক্তির উৎস। কালী হলেন শাক্তি, যিনি সৃষ্টির এবং ধ্বংসের প্রক্রিয়ায় প্রধান ভূমিকা পালন করেন। শক্তির মূর্ত রূপ হিসেবে তিনি বিশ্বজুড়ে সৃষ্টির শক্তি, জ্ঞান, এবং আত্মবিশ্বাসের অধিকারিণী।

৮. ভবানী (Bhavānī)
তাৎপর্য: "ভবানী" নামটি "ভব" (সৃষ্টি) এবং "আনি" (তাঁরা) থেকে এসেছে। দেবী ভবানী হচ্ছেন সেই শক্তি, যিনি সৃষ্টির পেছনে কাজ করেন এবং সব সৃষ্টির পরিপূর্নতার প্রতীক।

৯. রুদ্রকালী (Rudrakālī)
তাৎপর্য: "রুদ্র" শব্দটি শিবের রূপের সাথে যুক্ত, এবং কালী "রুদ্রকালী" রূপে শিবের সহচরী, শক্তির এক বিস্ময়কর রূপ হিসেবে পরিচিত। তিনি মহাশক্তি, সমগ্র বিশ্বের নিয়ন্ত্রক।

১০. মহাশক্তি (Mahāśakti)
তাৎপর্য: কালী মহাশক্তি, এক অসীম শক্তির আধিকারিণী। তিনি পৃথিবী, ব্রহ্মাণ্ড এবং সৃষ্টির প্রাথমিক শক্তি, যা সব কিছু বজায় রাখে এবং ধ্বংসও করে।

মা কালী বা কালীদেবীর নামগুলোর এই সমস্ত তাৎপর্য তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং আধ্যাত্মিক শক্তির প্রকাশ। তার নামের মধ্যে রয়েছে শক্তি, ধ্বংস, সৃজনশীলতা, এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির অঙ্গীকার।

এগুলি কালীমাতার একেকটি রূপ বা শক্তির প্রতিনিধিত্ব করে এবং এর মাধ্যমে সাধক কালী মায়ের আশীর্বাদ লাভ করতে চায়। এগুলি পাঠ করার মাধ্যমে মানসিক শান্তি ও শক্তি লাভ হয়।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url