কামাখ্যা মন্দির সম্পর্কে অজানা তথ্য ও পূজার সময়সূচি
গুয়াহাটীর কাছে নীলাচল পাহাড়ে কামাখ্যা মন্দির রয়েছে। ভারতের অনেক পুণ্যময় স্থানের মধ্যে, কামাখ্যা মন্দির খুবই পরিচিত। শাস্ত্রে বলা হয়েছে, এই মন্দির কামরূপ রাজ্যে অবস্থিত। প্রাচীন কাল থেকেই কামরূপ দেশকে নিয়ে নানা গল্প শোনা যাচ্ছে। অনেকের মতে, কামরূপ অসুরদের রাজ্য এবং এখানের মানুষরা তন্ত্র-মন্ত্র ও যাদুবিদ্যায় ভালো।
যেমন, যটকর্মে তারা পটু, যা আকর্ষণ, বশীকরণ ও মোহনজাতীয় কাজ করে। এখানে এমন কিছু লোক আছে যারা ডাকিনীবিদ্যা জানে, যার মাধ্যমে এক জায়গার গাছ অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব। এই সব কথা শোনা যায় এখানে। তবে এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা বলাও যায় না, কারণ প্রাচীন গ্রন্থে এদের উল্লেখ রয়েছে। সেসব গ্রন্থ সবই হাতে লেখা, কারণ তখন পত্রিকা ছাপার ব্যবস্থা ছিল না। অনেক সৌভাগ্যের বিষয় হলো, কিছু পুরনো লেখাগুলো এখনও ভালোভাবে সংরক্ষিত রয়েছে।
এই পীঠের তীর্থযাত্রীরা স্থানীয় পাণ্ডাদের এবং বাসিন্দাদের কাছে নানা ধরনের প্রশ্ন করেন। যদিও এখনকার দিনে তন্ত্র-মন্ত্রের চর্চা কমে এসেছে, এই স্থান এখনও তন্ত্রের দেশ হিসেবে পরিচিত। এখানকার পাকা রাস্তা, মন্দির এবং শিল্পকলা দেখে সত্যিই অবাক হতে হয়। কামাখ্যা পর্বতের নাম নীলপর্বত, এবং এখানেই দেবী কামাখ্যা আছেন। দেবীর স্তোত্রে কামাখ্যা নীল পর্বতে বলা আছে, তাই নীলপর্বত বলতে কামাখ্যা পর্বতকেই বোঝাবো। তবে এরকম তথ্যসংক্রান্ত কোনও প্রামাণিক বই মেলে না, তাই অনেক কিছু জানা সম্ভব হয় না। তবুও, এই জায়গার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অপূর্ব—সবুজ গাছপালা আর মন্দিরের চারপাশের দৃশ্য চোখে ঠেকে।
![]() |
কামাখ্যা মন্দির |
পথ নির্দেশ: কলিকাতা হইতে ট্রেনে অথবা প্লেনে গৌহাটি। গৌহাটি হইতে বাস অথবা ট্যাক্সিতে ১০ কিঃ মিঃ দূরে নীলাচল পাহাড়েই কামাখ্যা মন্দির।
কামাখ্যা মন্দির সম্পর্কে অজানা তথ্য
ChatGPT said:
কামাখ্যা মন্দির ভারতের অসম রাজ্যের গুয়াহাটিতে অবস্থিত একটি অত্যন্ত পবিত্র হিন্দু মন্দির। এটি প্রধানত দেবী কামাখ্যার মন্দির হিসেবে পরিচিত, যেখানে শক্তি পুজো করা হয়। এর ইতিহাস এবং সংস্কৃতির অনেক অজানা তথ্য রয়েছে:
অর্থাৎ মন্দিরের ইতিহাস: কামাখ্যা মন্দিরের ইতিহাস ১০ শতাব্দী থেকে শুরু হয়, যদিও অনেকের বিশ্বাস, এটি আরও প্রাচীন। এটি শাক্ত ধর্মের একটি অন্যতম প্রধান তীর্থস্থান এবং বিশেষত গুয়াহাটির নিম্ন প্রান্তে ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে অবস্থিত।
মন্দিরের বিশেষত্ব: কামাখ্যা মন্দিরে কোনো প্রতিমা বা মূর্তি নয়, বরং এখানে দেবী কামাখ্যার মহাশক্তির প্রদর্শন স্বরূপ একটি বিশেষ "যোনিপীঠ" রয়েছে, যা শক্তি এবং নারী শক্তির পূজনীয় স্থান হিসেবে গণ্য হয়।
মাহাবিষ্ণু রূপে কামাখ্যা: কামাখ্যা মন্দিরের বিশেষত্বের মধ্যে একটি হলো এর সন্নিহিত পুরাণ অনুযায়ী দেবী কামাখ্যা ঐশ্বর্যের অধিকারী এবং বিশ্বের সৃষ্টির সাথে জড়িত। তারা বিশ্বাস করেন যে এই মন্দির মাতা আদিশক্তির অন্যতম পূজনীয় স্থান।
অম্বুবাচী মেলা: কামাখ্যা মন্দিরে অম্বুবাচী মেলা এক বিশেষ তীর্থ উৎসব, যা প্রতি বছর জুন মাসে অনুষ্ঠিত হয়। এই সময়ে মন্দিরে দেবী কামাখ্যার পবিত্র রক্তস্রাবের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিশাল জমায়েত হয়। এটি হিন্দুদের কাছে বিশেষত পুণ্য তিথি হিসেবে বিবেচিত।
মন্দিরের স্থাপত্য: কামাখ্যা মন্দিরের স্থাপত্য শৈলী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ৫টি মন্দিরের সমন্বয়ে গঠিত, যার মধ্যে প্রধান মন্দিরটি ‘কালচক্র’ নামে পরিচিত। অন্যান্য মন্দিরগুলো দেবী মহাকালী, মহালক্ষ্মী, এবং অন্যান্য দেবী-দেবতাদের উদ্দেশ্যে নিবেদিত।
সংক্ষেপে জেনে নেই কামাখ্যা মন্দির সম্পর্কে
শক্তিপীঠ এবং তীর্থস্থান: কামাখ্যা মন্দির একাধিক শাক্ত শক্তিপীঠের মধ্যে অন্যতম। বিশ্বাস করা হয় যে, এখানে দেবী সতীর যোনি পড়ে ছিল, যা সৃষ্টির শক্তির উৎস হিসেবে পূজনীয়।
প্রাচীন সংস্কৃতির মিলনস্থল: কামাখ্যা মন্দির বিভিন্ন পুরানো সংস্কৃতির মিশ্রণ এবং একাধিক ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিশেষ স্থান রক্ষা করে। এটি মূলত শাক্ত, তান্ত্রিক, বৈষ্ণব, এবং অন্যান্য আধ্যাত্মিক শিক্ষার মিলনস্থল হিসেবে কাজ করে।
কামাখ্যা মন্দির আসামের গুয়াহাটির নীলাচল পাহাড়ে অবস্থিত এক গুরুত্বপূর্ণ হিন্দু মন্দির। এটি মা কামাখ্যার উদ্দেশ্যে তৈরি, যিনি দেবী দুর্গার এক রূপ। শক্তিপীঠগুলোর মধ্যে কামাখ্যা অন্যতম পবিত্র স্থান।
কামাখ্যা মন্দিরের প্রতিষ্ঠার পেছনের একটি গল্প বেশ মজার। পুরাণে বলা আছে, একবার রাজা দক্ষ একটি বড় যজ্ঞ আয়োজন করেছিলেন, কিন্তু তিনি তার কন্যা সতী ও সতীর স্বামী শিবকে আমন্ত্রণ জানালেন না। সতী এই অসম্মান সহ্য করতে না পারায় যজ্ঞস্থলে গিয়ে নিজেকে আগুনে দাওয়ায় দেয়। এই ঘটনা দেখে শিব অত্যন্ত রাগ হন এবং সতীর মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে পুরো পৃথিবীতে তাণ্ডব শুরু করেন।
তাণ্ডব বন্ধ করার জন্য বিষ্ণু সতীর দেহ ৫১ টুকরো করে ফেলেন, যা পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। যেখানেই সতীর অঙ্গ পড়েছে, সেখানেই শক্তিপীঠ গড়ে উঠেছে। কামাখ্যা সেই স্থান, যেখানে সতীর যোনি পড়েছিল, তাই এটি খুব রহস্যময় ও তান্ত্রিক।
কামাখ্যা মন্দির তান্ত্রিক পূজার জন্য বিখ্যাত, বিশেষ করে অম্বুবাচী মেলা সময়। সেই সময় দেবী ঋতুমতী হন বলে বিশ্বাস করা হয়।
এখানে দেবীর কোনও মূর্তি নেই, বরং যোনি আকৃতির একটি পাথরের ওপর প্রাকৃতিক জলধারা প্রবাহিত হয়, সেটিই পূজিত হয়। মন্দিরটি বহু বছর ধরেই তান্ত্রিক সাধকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হয়ে আছে।