অপরাজিতা স্তোত্রম (Aparajita stotram in bengali)
অপরাজিতা স্তোত্রম
অপরাজিতা স্তোত্রম হলো এক অত্যন্ত পবিত্র ও শক্তিশালী স্তোত্র যা দেবী দুর্গার অপরাজিতা রূপে স্তব করে পাঠ করা হয়। এটি বিশেষত বিজয়া দশমী বা যুদ্ধে জয়লাভের জন্য, বিপদ থেকে রক্ষা পেতে, ও আত্মরক্ষা শক্তি বৃদ্ধির জন্য পাঠ করা হয়।
অপরাজিতা পূজা পদ্ধতি
ওম লওপরাজিতায়ৈ নমঃ। অস্য অপরাজিতামন্ত্রস্য বেদব্যাস ঋষির নুষ্ট পছন্দঃ শ্রীঅপরাজিতা দেবতা ঐং বীজং হ্রীং শক্তিস্ম সর্ব্বকামার্থসিদ্ধর্থং জপে বিনিয়োগঃ।
![]() |
অপরাজিতা স্তোত্রম |
ধ্যান-ও নীলোৎপলদলশ্যামাং ভুজগোভরণোজ্বলাম। বালেন্দুমৌলিনীং দেবীং নয়নাত্রিতয়ান্বিতাম্। শঙ্খচক্রধরাং দেবীং। বরদাং ভয়নাশিনীম্। পীনোবুঙ্গস্তনী শ্যামাং বরপদ্মসুমালিনীম্। (ইতি ধ্যাত্বা পঠেৎ)-
ও মার্কেণ্ডেয় উবাচ-শৃণুধ্বং মুনয়ঃ সর্ব্বে সবর্বকামার্থসিদ্ধিদাম্। অসাধ্যসাধিনীং দেবীং বৈষ্ণবীমপরাজিতাম্।ওঁ নমো ভগবতে বাসুদেবায়, নমোহনস্তায় সহস্রশীর্ষায় ক্ষীরোদার্ণবশায়িনে শেষভোগপৰ্য্যঙ্কায় গরুড়বাহনায় অজায় অজিতায় অমিতায় অপরাজিতায় পীতবাসসে, বাসুদেব-সঙ্কর্যণ-প্রদ্যুম্নানিরুদ্ধ হয়গ্রীব-মহাবরাহা-চ্যুত নৃসিংহ-বামন-ত্রিবিক্রম-রাম-রাম-শ্রীরাম-
মৎস্য-কুৰ্ম্ম-বর প্রদে নমোহস্তুতে স্বাহা। ও অসুর দৈত্য-দানব-নাগ-গন্ধর্ব্ব-যক্ষ-রাক্ষস-ভূত-প্রেত-পিশাচ-কুষ্মাণ্ড সিদ্ধ-যোগিনী-ডাকিনী স্কন্দগুতোগান গ্রহ-নক্ষত্রদোষান্ প্রহাংশান্যান্ হন হন দহ দহ পচ পচ মথ মথ বিধ্বংসয় বিধ্বসেয় বিদ্রাবয় বিদ্রাবয় বিচুর্ণয় বিচুর্ণর শব্ঙ্খেন
চক্রেণ বজ্রেন খড়োণ খুলেন গদয়া মুষলেন হলেন দামোদর ভস্মীকুরু কুরু স্বাহা। সর্বদেব মহেশ্বর সর্ব্বগ্রহনিবারণ ডাকিনীবিংংসন জনার্দ্দন নমোহস্ততে স্বাহা।
ওয ইমামপরাজিতাং পরমবৈষ্ণবীং পঠতি বিদ্যাং স্মরতি সিদ্ধাং মহাবিদ্যাং পঠতি জপতি স্মরতি শূলোতি ধারয়তি। কীর্ত্তয়তি বা গৃহীত্বা হস্তে পথি গচ্ছতি বা ভক্ত্যা লিখিতা গৃহে স্থাপয়তি বা ন তস্যাগ্নির্ব্বায়ু-বজ্রপলাশনির্ভয়ং ন বর্ষভয়ং ন শত্রুভয়ং ন চৌরভয়ং ন সর্পভয়ং ন শ্বাপদভয়ং ন সমুদ্রভয়ং ন রাজভয়ং বা ভবেৎ কড়িদ্রাত্রজকার-স্ত্রীরাজকুলবিষোপবিষ-গরলদহন-বর্ণীকরণ-বিদ্বেষণোচ্চাটন-বধবন্ধনওয়ং বা ভবেৎ। এতৈৰ্ম্মগ্রৈরুদাহৃতৈঃ সিদ্ধৈঃ সংসিদ্ধ-পূজিতেঃ। ওঁ নমস্তেহত্বনঘে অভয়ে অজিতে অমিতে অপরে অপরাজিতে পঠতি
সিদ্ধে জপতি সিদ্ধে স্মরতি সিদ্ধে মহাবিদ্যে একানংশে উমে ক্রবে অরুন্ধতি সাবিত্রি, গায়ত্রি জাতবেদসে মানস্তোকে সরস্বতি। ধমনি ধামনি রমণি রামণি ধরণি ধারিণি তপনি তাপিনি সৌদামিনি অদিতি দিতি বিনতে গৌরি গান্ধারি শবরি কিরাতি মাতঙ্গি কৃষ্ণে যশোদে সত্যবাদিনি ব্রহ্মবাদিনি কালী কপালিনি করালিনি, করালনেত্রে তীমনাদিনি বিকরালনেত্রে সদ্যোপচয়কার মাতঃ সর্ব্ববাচনবরনে শুভদে অর্থনে সাধিনি অপমৃত্যুং নাশয় নাশয় পাপং হর হর ভুড়জ্জ্বলগতং পাতালগতং, স্থলগতমস্তরীক্ষগতং মাং রক্ষ রক্ষ সর্বভূতেভ্যঃ সর্ব্বোপদ্রবেভ্যো মহাভুতেভ্যঃ স্বাহা। ও যদ্যাঃ প্রণশ্যতে পুষ্পহ গর্তো বা পততে যদি। প্রিয়তে বালকাঃ যস্যা কাকবন্ধ্যা চ যা. ভবেৎ। ভূর্জপত্রে ত্রিমাং বিদ্যাং গন্ধচন্দনচর্চ্চিতাম্। বাহৌ গলে বা যত্নেন লিখিতা ধারয়ে যদি। এডির্দোষেশেিলপ্যেত সুভগা পুত্রিণী ভবেৎ। ভুজ্জপত্রে কুরুমেন লিখিয়া ধারয়েডু যঃ। রণে রাজকুলে দ্যুতে সংগ্রামে রিপুসফুলে। অগ্নিচৌরভয়ে ঘোরে নিত্যং তস্য জয়ো ভবেৎ। শহৃত বারয়ত্যেষা সমরে কাওধারিণী। গুস্ম-শূলাক্ষিরোগানাং ক্ষিপ্রং নাশয়তে ব্যথাম। শিরোরাগ-জ্বরাদীনাং-নাশিনীং-সর্ব্বদেহিনাম। তস্যথা-ঐকাহিক-হ্যাহিক-ব্র্যাহিক-চাতুর্থিক-মাসিক-দ্বৈমাসিক-ত্রৈমাসিক-চাতুর্মাসিক-যান্মাসিক-মৌহর্তিক-বাতিক-পৈত্তিক সান্নিপাতিক শ্লৈষ্মিকজুর-আমম্বর সততদূর বিষমজুর-প্রহনক্ষত্রদোষান গ্রহাংশ্চান্যান্ ও হর হর কালি শর শর গৌরি ধম ধম বিদ্যে আলে মালে তালে গন্ধে বন্ধে পচ পচ বিদ্যে মথ মথ বিদ্যে নাশয় নাশয় পাপং হর হর দুঃময়ং বিধ্বংসয় বিঘ্নং বিপ্লবিনাশিনি। অরিনাশিনি রজনি সন্ধ্যে দুন্দুভিনাদে মন্দর মর্দ্দয় মানস্তোকে মানসবেগে শঙ্খিনি চক্রিানি বঞ্জিনি খড়িগনি গদিনি খুলিনি অপমৃত্যুবিনাশিনি বিশ্বেশ্বরি দ্রাবিড়ি দ্রাবিড়ি কেশবদয়িতে পশুপতিসাইতে দুঃখদুস্তরে দুন্দুভি নাদিনী তীমমর্দিনি দমনি দামিনি শবরি কিরাতি মাতসি মাহেশ্বরি ইন্দ্রাণি ব্রহ্ম্যাণি বারাহি মাহেন্দ্রি কৌমারি, চণ্ডি চামণ্ডে নমোহস্তুতে। ও হ্রাং হ্রীং দুং ব্রৈং স্ট্রৌং ব্রঃ তুরু তুরু স্বাহা। ও যে মাং দ্বিষয়ি প্রত্যক্ষং পরোক্ষং বা তান্ সর্ব্বান হন হন দম দম পচ পচ মন্দয় মন্দয় তাপয় তাপয় শোষয় শোষয় উৎসাদয় ব্রহ্মাণী মাহেশ্বরি বারাহি, নারসিংহি কৌমারি বৈনায়কি বৈষ্ণবী ঐজি চান্দ্রি আমেরি চণ্ডি চামুণ্ডে বারুণি বায়ব্যে সর্বাকামফলপ্রদে রক্ষ রক্ষ প্রচণ্ড বিদ্যে ইন্দ্রোপেন্দ্রতগিনি জয়ে বিজয়ে
শান্তি-পুষ্টি-তৃষ্টি-কীর্তি-বিবর্জিনি কামাঙ্কুশে কামদুধে সর্ব্বকামবর প্রণে সর্বভূতেষু মাং প্রিয়ং কুরু কুরু স্বাহা। ও হ্রাং হ্রীং বুং বৈং হৌং হুঃ। ওঁ আকর্ষণি আবেশিনি জ্বালাংওমালিনি-রমণি রামণি ধরণি ধারিনি তপনি তাপনি মদনোম্মাদিনি সংশোবিণি সংমোহিনি মহানীলে নীলপতাকে মহাগৌরি মহাপ্লয়ে মহাচান্দ্রি মহাশৌরি মহামারি মহাশ্রিয়ে মহামায়ে আদিত্য-রশ্মি জাহ্নবি যমঘন্টে ও আং কিলি কিলি চিন্তামণি সুরভিসুরোৎপন্নে-সর্ব্বকামদুঘে তথ্যভিলষিতঃ কাৰ্য্যং তন্মে সিধাতু স্বাহা।
ওঁ অদিতে স্বাহা, ও অপরাজিতে স্বাহ্য, ওঁ দুঃ স্বাহা, ও ভুবঃ স্বাহা, ও স্বঃ স্বাহা, ও দুর্ভুবঃ স্বাহ্য। ওঁ যত এবাগতং পাপং তয়ৈব প্রতিগচ্ছতু স্বাহা। ও বলে-বলে মহাবলে অসিদ্ধ সাধিনি স্বাহা। অপরাজিতা-স্তোত্রম্ সমাপ্তম্
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে প্রচলিত একটি লোকাচার বা লোকউৎসব হল অপরাজিতা পুজো। এই পূজায় একমাত্র অপরাজিতা ফুল ছাড়া সম্ভব হয় না তাই এই পূজা অপরাজিতা পূজা নামেও পরিচিত। দেবী লক্ষ্মী বা বিষ্ণু দেবের পত্নীকে পুজো করাকে অপরাজিতা পূজা বলা হয়।
অপরাজিতা পূজার সময়
বাংলা মাসের আশ্বিন কার্তিক মাসে অর্থাৎ শরৎকালে এই পুজো করা হয়ে থাকে আবার কোন কোন অঞ্চলে দেবী লক্ষীকে পুজো করার সময় অপরাজিতা ফুল দিয়ে পূজা করে থাকে।
পূজার প্রস্তুতি
যেহেতু হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী নীল অপরাজিতা ফুল বিশেষ একটি পবিত্র ফুল তাই পুজোর সময় সাদা বা নীল অপরাজিতা ফুল সংগ্রহ করতে হবে।
পূজার স্থান পরিষ্কার করা: পূজার স্থান সঠিকভাবে পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন করে একটি চৌকি বা পার্টিতে লাল কাপড় বিছিয়ে পূজার স্থান তৈরি করতে হবে।
ঘট স্থাপন: পূজার স্থান সঠিকভাবে পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন করে একটি চৌকি বা পার্টিতে লাল কাপড় বিছিয়ে পূজার স্থান তৈরি করতে হবে।
পূজার পদ্ধতি
সকালে স্নান করে পরিষ্কার বস্ত্র পরিধান করুন। সকালে পবিত্র মন নিয়ে স্নান করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাপড়-চোপড় পরিধান করুন এবং ভোটের পাশে অপরাজিতা ফুলের পাতা মালা ফুল প্রভুতি রাখুন। ধূপ ধুনো দিয়ে ও দীপ জ্বেলে পূজা আরম্ভ করুন।
মন্ত্রোচ্চারণ:
"ওঁ শ্রীমহালক্ষ্ম্যৈ নমঃ" (লক্ষ্মী দেবীর মন্ত্র)
অথবা "ওঁ নমো ভগবতে বাসুদেবায়" (বিষ্ণু মন্ত্র)
এরপর ফুল, ফল ও মিষ্টান্ন নিবেদন করুন এবং আরতি করুন ও প্রার্থনা করুন।.
অপরাজিতা স্তোত্রম পাঠের উপকারিতা:
অপরাজিতা ফুল দিয়ে পূজা করলে সৌভাগ্য ও সম্পদ বৃদ্ধি পায় বলে সনাতন ধর্মীরা বিশ্বাস করে থাকে। এছাড়া অশুভ শক্তি দূর করে এবং পরিবারে শান্তি আনে বলে মনে করা হয় এই পুজো করলে। এই পুজো করলে সকল প্রকার বাধা ও বিপদ থেকে রক্ষা করে এবংআত্মবিশ্বাস ও সাহস বৃদ্ধি পায়। দুর্গা বা শক্তির আরাধনার একটি পবিত্র রূপ বলে ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত রয়েছে। তাই অপরাজিতা স্তব পাঠ অতীব জরুরী।
Comments
Post a Comment