দুর্গাপূজায় করণীয় ও বর্জনীয় কিছু বিষয় এবং দুর্গোৎসবের দ্রব্য

দুর্গাপূজায় কোন কাজগুলো করলে পাপ হবে আর কি করলে পুর্ণ হবে জেনে রাখুন। এ বছরের নতুন পুঁজোয় সনাতনীর সঠিক পন্থায় ধর্মীয় পুস্তক ও জ্ঞান অনুসারে মা দুর্গার আশির্বাদ নিয়ে আসুন আমরা আজ কিছু করে দেখাই। দেবীর পুজোর স্থান এখন বিনোদন আর বিধর্মীদের বিতর্কের স্থান হয়ে গেছে। তাই এখুনি সময় দুর্গাপূজায় করণীয় ও বর্জনীয় কিছু বিষয় নিয়ে ভাববার।


★NB★দয়াকরে নিচের পোষ্টটি পড়বেন ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিবেন। যাতে সনাতনীরা আবার মাথা উঁচু করে সবসময় সেরাই থাকতে পারে।
দুর্গাপূজায় করণীয় ও বর্জনীয় কিছু বিষয় এবং দুর্গোৎসবের দ্রব্য
দুর্গাপূজায় করণীয় ও বর্জনীয় কিছু বিষয় এবং দুর্গোৎসবের দ্রব্য


দুর্গাপূজায় করণীয় ও বর্জনীয় কিছু বিষয় 

১# মা দুর্গার প্রতিমা নির্মাণে শালীনতা ও শ্রদ্ধার প্রতি গুরুত্ব দিন: দুর্গা পূজা হলো শক্তি আর মাতৃরূপের আরাধনার মহোৎসব। তাই প্রতিমা নির্মাণের সময় পূজা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে নিশ্চিত করুন যে মায়ের মূর্তি পূর্ণাঙ্গ শালীনতা ও ভাবগাম্ভীর্য বহন করে। প্রতিমার সাজ-সজ্জা ও পোশাক যেন মাতৃদেবীর মাহাত্ম্যকে সমুন্নত রাখে—অর্ধনগ্নতা বা বলিউডি নায়িকা/মডেলদের মতো অশ্লীল বা অসংযত পোশাক এড়িয়ে চলাই উত্তম। প্রতিমার অবয়ব নির্মাণেও সতর্ক থাকা জরুরি। মুখাবয়ব বা বক্ষদেশ যেন মানবিক রূপের অনুকরণে অতিমাত্রায় বাস্তবধর্মী না হয়। বরং ঐতিহ্যবাহী শিল্পরীতি অনুসরণ করুন—যেখানে চোখগুলো প্রশস্ত ও দিব্য আভায় ভাস্বর (প্রাচীন চিত্রকলা ও শাস্ত্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী)। মা দুর্গার প্রতিমা যেন মাতৃসুলন মহিমান্বিত ও জ্যোতির্ময় রূপে প্রকাশ পায়, কোনো সাধারণ তরুণী বা মানবিক মডেলের অনুকরণে নয়। ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মর্যাদা রক্ষা করতে প্রতিমা নির্মাণে শাস্ত্রীয় নীতির পাশাপাশি সামাজিক সংবেদনশীলতাকেও প্রাধান্য দেওয়া উচিত।


২# শালীনতা বজায় রেখে পূজার আনন্দ উদযাপন করুন: দুর্গা পূজা একটি পবিত্র ধর্মীয় উৎসব। এই সময় আমাদের আচার-আনুষ্ঠান ও আচরণে শালীনতা ও ভক্তির প্রকাশ থাকা আবশ্যক। দুঃখের বিষয়, আজকাল অনেক পূজা মণ্ডপে উদ্ভট ও অশালীন নাচের চল দেখা যায়, যা পূজার পবিত্র পরিবেশকে নষ্ট করে। এ ধরনের অনৈতিক আচরণ পরিহার করে আমাদের ঐতিহ্যবাহী আরতি-ধুনুচি নাচ বা সামাজিক নৃত্যকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। যদি কেউ পরিবারের সদস্যদের নাচানোর ইচ্ছা পোষণ করেন, তাহলে মন্দির বা মণ্ডপ থেকে অন্তত ১০০ গজ দূরে আলাদা একটি স্টেজ তৈরি করে তা করতে পারেন। এতে পূজার পবিত্রতা অক্ষুণ্ণ থাকবে। মনে রাখবেন, সন্ধ্যা আরতির সময় কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলা জরুরি। যেমন – দেবী মায়ের চরণের দিকে দৃষ্টি রেখে ধূপ-দীপসহ পূজার উপকরণ অর্পণ করতে হবে। এই সময় পিঠ বা পার্শ্বদেশ যেন মায়ের দিকে না থাকে এবং দৃষ্টি যেন সর্বদা মায়ের চরণেই নিবদ্ধ থাকে। আজকাল অনেকেই আরতির সময় এমন অশালীন আচরণ করেন যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। পোশাক-পরিচ্ছদের ক্ষেত্রেও সচেতন হওয়া প্রয়োজন। পূজার সময় সাধারণ ও শালীন পোশাক পরিধান করুন। বিশেষ করে নারীদের প্রতি অনুরোধ – মন্দির বা মণ্ডপে আসা-যাওয়ার সময় মাথা ঢেকে নেওয়া উচিত। এটি শুধু ধর্মীয় রীতি নয়, বরং সম্মান ও শালীনতার পরিচয়। পূজা হলো ভক্তি ও শুদ্ধাচারের উৎসব। 

৪# সমাজে হিংসা ও অসহিষ্ণুতা: পূজার নামে চাঁদার চাপ না দেওয়াই উত্তম সমাজে হিংসা ও প্রতিযোগিতার মনোভাবের কারণে অনেকেই পাড়া-মহল্লায় বা ব্যক্তিগতভাবে মন্দির তৈরি ও পূজা-অর্চনার আয়োজন করতে দেখা যায়। এ ধরনের প্রবণতা কেবল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকেই ক্ষুণ্ণ করে না, বরং এটি একটি অসুস্থ ও জঘন্য মানসিকতার প্রকাশ। অনেক ক্ষেত্রে, গরিব প্রতিবেশীদের উপর জোরপূর্বক চাঁদার বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়, যা তাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক। পূজার নামে অর্থ সংগ্রহ করা যদি অপরিহার্য হয়, তবে সেটি যেন স্বেচ্ছাসেবামূলক হয় এবং অতিরিক্ত অর্থ আশেপাশের দরিদ্র ও অসহায় মানুষের সাহায্যে ব্যবহৃত হয়। ধর্মীয় অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত সাম্য, সেবা ও সম্প্রীতির প্রচার—সমাজে বিভেদ বা অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা নয়। এসব অসুস্থ প্রতিযোগিতা ও হিংসাত্মক মনোভাব পরিহার করে মানবিকতা ও সহমর্মিতার সঙ্গে ধর্মীয় আচার পালন করাই শ্রেয়।

৫# সকলকে নিয়ে পূজার আনন্দ ভাগ করে নিন: দুর্গা পূজার পবিত্র দিনগুলোতে কোনোভাবেই অঞ্জলি দেওয়া মিস করবেন না। শুধু নিজে উপস্থিত হওয়াই নয়, পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব ও পাড়া-প্রতিবেশীদেরও সঙ্গে নিয়ে যান। আপনার পাশের বাড়ির মানুষটি যদি আপনার মন্দিরের সদস্যও না হন, তাকে আন্তরিকভাবে আমন্ত্রণ জানান। পূজার পবিত্র আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগ করে নেওয়াই হলো সত্যিকারের উৎসবের রীতি। ব্রাহ্মণ যেসব সময়ে মায়ের পূজা করবেন, সেই বিশেষ মুহূর্তগুলোতে মন্দিরে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করুন। এতে পূজার পবিত্র আবহ আরও গভীরভাবে অনুভব করতে পারবেন। পূজা দেখতে যাওয়ার সময় একা না গিয়ে দলবদ্ধভাবে যাওয়ার চেষ্টা করুন—আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী সবাইকে সঙ্গে নিয়ে যান।

৬# পূজার শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় সচেতন হোন: দুর্গা পূজার সময় প্রতিমা নির্মাণ থেকে বিসর্জন পর্যন্ত নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা আমাদের সকলের দায়িত্ব। বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই বিষয়ে বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন। প্রতিমা তৈরির স্থান ও পূজা মণ্ডপে রাত জেগে পাহারা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়। প্রতিটি কমিটির সদস্যদের নিজ নিজ দায়িত্ব গুরুত্বের সাথে পালন করতে হবে। নিরাপত্তা, পরিচ্ছন্নতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য পূর্বপরিকল্পনা নিন এবং স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় রাখুন। পূজার পবিত্র পরিবেশ যেন কোনোভাবেই বিঘ্নিত না হয়, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখুন।

৭# প্রতিমা বিসর্জনে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রাখুন: পবিত্র দুর্গোৎসবের সমাপ্তিতে প্রতিমা বিসর্জনের সময় ধর্মীয় অনুভূতি ও শালীনতা রক্ষা করা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব। এই পবিত্র মুহূর্তে যেকোনো ধরনের অশ্লীল গান, উদ্ভট নৃত্য বা আপত্তিজনক আচরণ সম্পূর্ণভাবে পরিহার করুন। পরিবর্তে ঐতিহ্যবাহী ঢাক-ঢোল, কীর্তন ও ভজন-গীতির মাধ্যমে মায়ের বিদায়ের শোভাযাত্রাকে পবিত্র ও শ্রদ্ধাশীল করুন।

৮#পূজোত্তর সম্প্রীতির বন্ধন: একসাথে সময় কাটানোর আহ্বান দুর্গোৎসবের পরবর্তী সময়টি পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করার সেরা সুযোগ। পূজা শেষে আশেপাশের সকল হিন্দু ভাইবোনদের নিয়ে একটি আন্তরিক 'গেট টুগেদার' আয়োজন করতে পারেন। এ সময় নিকটাত্মীয় ও দূরের স্বজনদের বাড়িতে পরস্পরের খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করুন। 

৯# সম্মান ও সুরক্ষা: দুর্গোৎসবের পবিত্র পরিবেশ রক্ষায় আমাদের সকলকে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে। এই উপলক্ষ্যে আমরা সবাইকে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি - আমাদের মা-বোনদের নিরাপত্তা ও সম্মান রক্ষায় সজাগ দৃষ্টি রাখুন।

১০# পূজার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখুন: দুর্গোৎসবের পবিত্রতা রক্ষার্থে আমরা সকলের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছি মাইক ও উচ্চস্বরে শব্দ ব্যবহারে সংযত হওয়ার। বিশেষ করে: সংখ্যালঘু এলাকাগুলোতে মাইকের ব্যবহার সীমিত রাখুন, ভোরবেলা ও রাতের বেলায় মাইক বাজানো থেকে বিরত থাকুন, আবাসিক এলাকায় শব্দদূষণ সৃষ্টি হতে পারে এমন যন্ত্র ব্যবহার করবেন না

১১#পবিত্র চিত্তে পূজা করুন: দুর্গোৎসবের পবিত্র দিনগুলোতে সকল প্রকার নেশাদ্রব্য সম্পূর্ণভাবে পরিহার করুন। মদ্যপান, গাঁজা বা অন্য কোনো নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করলে শরীর-মন অপবিত্র হয়, যা পূজার অর্ঘ্য গ্রহণের অযোগ্য করে তোলে। নেশাগ্রস্থ অবস্থায় পূজা করলে তা গ্রহণযোগ্য হয় না, এক বছরের প্রতীক্ষার ফল বৃথা যেতে পারে, শারীরিক ও মানসিক পবিত্রতা ধর্মীয় আচারের অপরিহার্য অংশ

১২#সেবার মাধ্যমে মায়ের সন্তুষ্টি অর্জন করুন:দুর্গোৎসবের প্রকৃত তাৎপর্য হলো ভক্তি ও সেবার মাধ্যমে মাতৃরূপের আরাধনা করা। দুঃখের বিষয়, আজকাল অনেকেই থিম পূজা বা মন্দির সজ্জায় প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব পোষণ করেন, যা সম্পূর্ণ অনুচিত। "হিংসা পাপ" - এই সত্যটি স্মরণ রাখুন।

দুর্গোৎসবের দ্রব্য

কল্পারম্ভ-সিন্দুর, পঞ্চবর্ণের গুঁড়ি, পঞ্চপল্লব, পঞ্চরত্ন, পঞ্চশস্য, পঞ্চগব্য, বট ও কুণ্ডহাঁড়ি ১, দর্পণ ১, তেকাঠা ১, তীর ৪, একসরা আতপতণ্ডুল, সশীষডাব ১, ঘটাচ্ছাদন গামছা ১, বিষ্ণুর ধুতি ১, কল্পরম্ভের শাটি ১, পত্তীর শাটী ১, তিল, হরীতকী, পুষ্পাদি, চন্দ্রমাল্য, দধি, মধু, ঘৃত, চিনি, বড়-নৈবেদ্য ৩, কুচা-নৈবেদ্য ১, আসনাঙ্গুরীয়ক ৩, মধুপর্কবাটি ৩, ভোগের দ্রব্যাদি, আরতি।

নবপত্রিকার দ্রব-কলাগাছ ১, কালকচুর গাছ ১, হরিদ্রা গাছ ১, জয়ন্তী গাছ বা জয়ন্তীডাল ১, বেলডাল ১, ডালিম গাছ ১, অশোকডাল ১, মানকচুরগাছ ১, ধানগাছ ১, শ্বেতপরাজিতা লতা, রক্তসূত্র, আলতা, বন্ধন করিবার পাটের দড়ি, কলারপেটা ২টি।

যাহারা প্রতিপদ হইতে কল্পারম্ভ করিয়া প্রতিমার উপর বা ঘটে দুর্গার পূজা করেন তাঁহারা, প্রতিপদ তিথি হইতে পঞ্চমী পর্যন্ত প্রত্যহ এই কয়টি দ্রব্য দিবেন। যাঁহারা প্রতিপদে মাত্র চণ্ডীপাঠের সঙ্কল্প করিয়া চণ্ডীর পূজা করেন, সপ্তমীর দিনে দুর্গাপূজার সঙ্কল্প করেন, তাঁহাদের এ সকল দ্রব্য দিবার প্রয়োজন হয় না।

প্রতিপদে মাথাঘঁষা, ফুলের তৈল, আতর, চিরুনী, গোলাপ জল। দ্বিতীয়াতে মাথা বাঁধিবার পট্টডোর ১। তৃতীয়াতে দর্পণ, সিন্দুর, অলক্তক। চতুর্থীতে মধুপর্ক, কাংস্যবাটি, তিলক, অঞ্জন। পঞ্চমীতে অঙ্গরাগ, পট্টবস্ত্র যথাশক্তি অলঙ্কার।

বোধন দ্রব্য-বিল্ববৃক্ষ বা ফলযুগ্ম সহিত বেলের ডাল ১, ঘট ১, এক সরা আতপ তণ্ডুল, ঘটাচ্ছাদন গামছা ১, সশীষ ডাব ১, তীর ৪, পঞ্চগুঁড়ি, পঞ্চগব্য, পঞ্চশস্য, পঞ্চরত্ন, পঞ্চপল্লব, বোধনের শাটি ১, বিল্ববৃক্ষ, পূজার ধুতি ১, আসনাঙ্গুরীয়ক ২, মধুপর্কের বাটি ১, (বিল্ববৃক্ষের পূজা কেহ কেহ দশোপচারেও করেন), দধি, ঘৃত, পুষ্পাদি, তিল, হরীতকী, মাষভক্তবলি ১, নেবেদ্য ২, কুচানৈবেদ্য ১, ছুরি ১, চন্দ্রমাল্য ১, ভোগের দ্রব্যাদি, আরতি।

আমন্ত্রণের দ্রব্য-আমন্ত্রণের শাটি ১, আসনাদুরীয়ক ১ (একদিনে বোধন ও আমন্ত্রণ হইলে একটি মাত্র ষোড়শোপচার পূজাই হইয়া থাকে), মধুপর্ক বাটি ১, দধি, মধু, ঘৃত, পুষ্পাদি, লৈরদ্য ১, তিল, হরীতকী।

অধিবাস দ্রব্যাদি-তৈল, হরিদ্রা, মহী (গঙ্গামৃত্তিকা), গন্ধ, শিলা (নুড়ি), ধান্য, দূর্বা, পুষ্প, ফল (অখণ্ড কদলী একছড়া), দধি, ঘৃত, স্বস্তিক (পিটুলি নির্মিত), সিন্দুর, শঙ্খ, কজ্জ্বল, রোচন (গোরচ), সিদ্ধার্থ (শ্বেতসর্ষপ), স্বর্ণ, রৌপ্য, তাম্র দর্পণ, অলক্তক (আলতা), হরিদ্রাসূত্র, লৌহ, চার, দীপ, তীর, আরতি।

সপ্তমীপূজার দ্রব্য-গুরু, পুরোহিত, পূজক ও আচার্য বরণ ৪ জোড়া, বরণাঙ্গুরীয়ক ও যজ্ঞোপবীত ৪, তিল, হরীতকী, পুষ্প প্রভৃতি, ঘট ১, সশীষ ডাব ১, এক সরা আতপ চাউল ব্য ধান্য, বিল্বপত্র, কুণ্ডহাঁড়ি ১, তেকাঠা, প্রধান দীপ ১, দর্পণ ১।

মহান্নানের দ্রব্য-তৈল, হরিদ্রা, দত্তকাষ্ঠ, অষ্টকলস ৮, 'সহস্রধারা ১, পঞ্চগব্য, পঞ্চামৃত, পঞ্চাশস্যচূর্ণজল, পঞ্চকষায়, শিশিরোদক, ইক্ষুরস, বেশ্যাদ্বারমৃত্তিকা, গজদন্ত-মৃত্তিকা, বরাহদন্ত মৃত্তিকা, গঙ্গামৃত্তিকা, চতুষ্পথমৃত্তিকা, রাজদ্বারমৃত্তিকা, বল্মীকমৃত্তিকা, বৃষশৃঙ্গমৃত্তিকা, নদীর উভয়কূলমৃত্তিকা, পর্বতমৃত্তিকা, তিলতৈল, বিষ্ণুতৈল, উষ্ণোদক, নারিকেলোদক, সবৌষধি, মহৌষধি, পঞ্চরত্নমিশ্রিত জল, সাগরোদক, পদ্মরেণোদক, দুগ্ধ, মধু, কপূর, অগুরু, চন্দন, কুমকুম, বৃষ্টিজল, ফলোদক (ডাবের জল), সরস্বতীজল, নির্ঝরোদক, সপ্তসমুদ্রের জল।

অন্যান্য দ্রব্য-পঞ্চগুঁড়ি, পঞ্চরস, পঞ্চশস্য, 'পঞ্চপল্লব, সিন্দুর, ঘটাচ্ছোদন গামছা ২, আরতির গামছা, শ্বেতশর্ষপ, মাষকলাই, জবাপুষ্প, কুচা-নৈবেদ্য, আসনাঙ্গুরীয়ক ৪০ বা ২২, মধুপর্কবাটী ৪০ বা ২২, মধু, চিনি, নৈবেদ্য ৪০ বা ২২, প্রধান নৈবেদ্য ১, নবপত্রিকার পরিধেয়  শাটী ৯ বা ১, মূলপূজার শাটী, লক্ষ্মী, সরস্বতী, চন্ডী, কার্তিক, গণেশ, শিব, বিষ্ণু, নবগ্রহ ১ বা ১, ময়ূর, মুষিক, সিংহ, অসুর, মহিষ, বৃষ, সর্প, জয়া, বিজয়া, বিষ্ণু, শিব ও রাম প্রত্যেকের বস্ত্র, অর্ঘ্যচন্দমাল্য খালা ১, ঘটি ১, নখ, লৌহ, শংখ ২, সিন্দুরচুবড়ী ১, পুষ্পমাল্য, বিল্বপত্রমাল্য, রচনার দ্রব্যাদি, ফলমূলাদি, ভোগের দ্রব্যাদি, আরতি, ছাগাদি বলির দ্রব্য। অনেকে শেষ দিনে হোম করেন, তাহাদের জন্য হোমের দ্রব্য।

হোমের দ্রব্য-বালি, কাঠ, খোড়কে, গোময়, কুশ, ঘৃত, বিল্বপত্র ১০৮, পূর্ণপাত্র।

অষ্টমী পূজা-মহাস্নান দ্রব্য, দস্তকাষ্ঠ ১, বস্ত্র পূর্বদিনের ন্যায় একমাত্র মূলপূজার শাটী, পুষ্প প্রভৃতি আসনাঙ্গুরীয়ক ৪০, ২২ বা ১, মধুপর্কবাটী ঐ, দধি, মধু, ঘৃত, চিনি, নৈবেদ্য ৪০ বা ২২, কুচা-নৈবেদ্য ৪, চন্দমাল্য, পুষ্পমাল্য, বিল্বপত্রমাল্য, খালা ১, ঘরা বা ঘটি ১, নথ ১, লৌহ ১, শংখ ২, রচনা, সিন্দুরচুবড়ী, (নন্দিকেশ্বর মতে-নবঘট বা নবপতাকা), ভোগের দ্রব্যাদি, আরতি।

সন্ধি পূজা-পুষ্প প্রভৃতি, স্বর্ণাঙ্গুরীয়ক ১, মধুপর্ক, কাংস্যবাটী ১, দবি, চিনি, মধু, ঘৃত, চেলীর শাটী ১, প্রধান নৈবেদ্য, কুচা-নৈবেদ্য ১, থালা ১. ঘড়া ১, লৌহ ও নথ ১, পাটি ১ বালিশ ১, চন্দ্রমাল্য ১, থালা ১, দীপ ১০, ভোগের দ্রব্যাদি, আরতি।

নবমী পূজা-মহাস্নান দ্রব্য, দন্তকাষ্ঠ, পুষ্প প্রভৃতি, বস্ত্র, আসনাঙ্গুরীয়ক, মধুপর্কের বাটী, বস্ত্র (পূর্বের ন্যায় অথবা মূলপূজা ও চণ্ডীর শাটামাত্র), দধি, মধু, ঘৃত, চিনি, নৈবেদ্য ৪০ বা ২২, কুচা-নৈবেদ্য ৪, থালা ১, ঘটা ১, সিন্দুরচুবাড়ী ১, লৌহ, শংখ, নথ, চন্দ্রমাল্য, পুষ্পমাল্য, রচনা, পান, পানের মশলা, হোমের বিবপত্র, হোমের দ্রব্যাদি, পূর্ণপাত্র, আরতি, কুমারী পূজা, দক্ষিণা।

দশমী পুজা-সকলের দশোপচারে পূজা, গন্ধ, পুষ্প, দূর্বা, তুলসী, বিশ্বপত্র, খুপ, দীপ, নৈবেদ্য, দধি, মুড়কী, মিষ্টান্ন, সিদ্ধি, আরতি।

পরিশেষঃ আমার লেখাটা দেখে মাথাভারী মনে হলেও এগুলো করা যেতেই পারে, কতটা হবে আর কতটা হবেনা এসব চিন্তা না করে আমরা চেষ্টা করতে পারি।

আমার ব্যাক্তিগত মন্তব্য দিয়ে শেষ করবো_এখন পুজোয় অন্য ধর্মীয় লোকজনের বিশৃঙ্খলা রক্ষায় কমিটির লোকজন , পুলিশ, আনছার ইত্যাদির প্রয়োজন হয়। কেন প্রয়োজন আপনি জানেন কি? দিনের বেলা তো এত সিকিউরিটি প্রয়োজন হয় না যখন আমরা পুস্পাঞ্জলি দেই! কারণ সন্ধ্যার পর থেকে মন্দির চত্বর হয়ে যায় রঙ্গমঞ্চ।("সিন্দুরমতির সার্কাস" শোতে আমাদের মা বোন নাচাই আর মানুষ তা উপভোগ করে শিষ দেয়) এগুলো বন্ধ করলে কোন কিছুর প্রয়োজন হতো না।। সনাতন ধর্মীয় আপনি আমি, যেদিন থেকে সঠিক ধর্মীয় জ্ঞান আহরন করা শুরু করবো ও সেই জ্ঞান আবার শিশুদের মাঝে প্রদান করে দিব সেদিন বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের চির প্রাচীণ সনাতনধর্মের জয় হবেই। আর চিরতরে হারিয়ে যাবে অন্য ধর্মগুলো।

Comments