শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কম্পনের ফলাফল

শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কম্পনের ফলাফল বা প্রভাব বিভিন্ন দিক থেকে বিবেচনা করা যায়: চিকিৎসাগত বা শারীরিক প্রভাব এবং জ্যোতিষশাস্ত্রীয়/লোকবিশ্বাসভিত্তিক ফল।

​এখানে দুটি প্রধান ক্ষেত্রের ফলাফল তুলে ধরা হলো

জ্যোতিষশাস্ত্রীয় ফলাফলঃ

বাম চক্ষুর নীচের পাশ কম্পনে সাত দিনের মধ্যে অপমানকর কোন না কোন ঘটনা মনকে বিব্রত করে তুলবে। বাম চোখের নীচের অংশ কম্পনে দুঃসংবাদ এর প্রাপ্তি ঘটে আর উপরের অংশ কম্পনে শারীরিক অসুস্থতা নির্দেশ করে এবং বাম চোখের কোনা কম্পনে কোন ঘাতক ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে।

শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কম্পনের ফলাফল বা প্রভাব বিভিন্ন দিক
শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কম্পন


ডান চক্ষুর উপরের অংশ কম্পনে মনের আশা আকাঙ্খালাভ হয়। আর নীচের অংশ কম্পনে কোন কোন সুখ শান্তি অবশ্যই প্রাপ্তি হয়। ডান চক্ষুর উপরের অংশ ভ্রুর উপরে কম্পনে অর্থসম্পদ লাভ হয়। যে কোন চোখের কোনা কম্পনে এক মাসের মধ্যে কোন না কোন প্রাপ্তি ঘটে। এছাড়া ডান চক্ষুর নীচের পাতা কম্পনে সম্মানের সহিত অর্থ আগমন ঘটে। বাম ভ্রু কম্পনে মূল্যবান জিনিষ পত্র হারানো বা চুরি। চুরি হয়ার সম্ভাবনা। ভ্রুর নিচের অংশ কম্পনে অর্থ। নাশ হয়। বাম অংগের যে কোন অংশ কম্পনে কমবেশী অর্থ নাশ হয় এ ছাড়াও মামলা মকদ্দমায় লিপ্ত ব্যক্তির বাম। হাত পায়ের আঙ্গুল কম্পনে সেই মামলার পরাজয় বরণ করতে হয়। দেহের ডান অংশের যে কোন স্থান বিশেষ করে হাত, পা, নাক, কান গলা কম্পনে হৃদয়ে আনন্দ অনুভুত হয়। গালের বা দিক কম্পনে সম্মান ও অর্থ লাভ হয়। ঠোট কম্পনে সুনাম যশ ও সমৃদ্ধি লাভ হয়। শুধুমাত্র উপরের ঠোঁট কম্পনে শত্রুর পরাক্রম নষ্ট হয় এবং গৃহে অতিথির


আগমন বোঝায়। আর নীচের ঠোঁট কম্পনে রক্তপাত ও দুর্ঘটনার কারণ জানবে। ডান হাতের তালু চুলকালে কোন না কোন ভাবে অর্থলাভ হবে। আর বাম হাতের তালু চুলকালে এক মাসের


মধ্যে অর্থনাশ হবেই হবে। নারীর বাম অঙ্গ স্পন্দিত হলে সংসারের কল্যান হয়। বিপরীতে হাতের পিঠের অংশ স্পন্দিত হলে নিন্দিত চরিত্রের জন্য সমাজে কলুষিত হতে হয়।


বামপায়ের নীচের অংশ কম্পনে খাদ্যলাভ, গোড়ালী কম্পনে ভ্রমণ, বুড়ো আঙ্গুল কম্পনে কার্যলাভ, অনামিকা কম্পনে সুখ, শান্তি, 'সমৃদ্ধি, তর্জনী কম্পে কম্পনে ঝগড়া বিবাদের সম্ভাবনা আর কনিষ্ঠা সস্পনে গৃহে চুরি কার্য সংঘটিত হয়। ঠোঁট বা জিহ্বা কম্পনে কিংবা চুলকালে চুলকালে সুন্দর ও মুখরোচক খাদ্য খাবার লালসা জাগে।


কপালে ডান দিকে কেশের নিকটে কম্পনে অর্থ ও যশ লাভ হয়। পিঠ কম্পনে ভবিষ্যৎ বক্তার সহিত সাক্ষাত হয়। ডান হাতের মাঝখান কম্পনে অর্থলাভ হয়। গলা কম্পনে মনের আশাপুরন হয়। গলার বাম অংশ কম্পনে প্রচুর কষ্ট করে অর্থ উপার্জন বোঝায়। ভ্রূকম্পনে দুঃশ্চিন্তায় পড়তে হয়। থুথনি কম্পনে দূর থেকে সুখবর পাবেন। নাক কম্পনে


সম্মান নষ্ট হয়। ঘাড় কম্পনে মানসিক স্বস্থি ফিরে পাবে। ডান কান কম্পনে কর্মের উচ্চপদ লাভ আর বাম কান কম্পনে গুপ্তধন লাভ হয়। এবং জিহ্বা কম্পনে শোক, দুঃখ ও দুর্দশায় পড়তে হয়। ডান পায়ের তর্জনী আঙ্গুল, নাভীর বাম পাশ, নাকের বা দিক কম্পনে নানাবিধ বিপদের সম্ভাবনা। বাম পাঁজর, বামগান,


নাকের ডান অংশ, দুই কান ও ডান পায়ের অনামিকা আঙ্গুল কম্পনে সজনদের সহিত ঝগড়া বিবাদ, দাম্পত্য কলহ ছাড়াও কোন না কোন শোক সংবাদ পাবে। ডান পায়ের নীচের অংশ কম্পনে দুঃশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হবে। ডান হাট কম্পনে মনের আশা পুরন হয়। ডান পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি কম্পনে বন্ধু দর্শন ও ডান পায়ের গোড়ালি কম্পনে মানসিক অশান্তি বিদূরিত হয়।


মাথার উপর কম্পনে রাজ সম্মান লাভ। কপালের বাঁদিক কম্পনে অর্থলাভ ডানদিক কম্পনে মানসিক শান্তি আর ললাটের মাঝখানে কম্পনে সম্মান ও বিদেশ ভ্রমণ হয়। নাভির ডান দিক কম্পনে পরধন লাভ, পেট কম্পনে সন্তান লাভ, ঘাড় কম্পনে কর্মে ব্যর্থতা, তলপেট কম্পনে দুঃস্বপ্ন দর্শন, বুক কম্পনে শত্রুভয়, ডান পাঁজর কম্পনে দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়ীত হয়। বগল কম্পনে বন্ধুর সহযোগীতায় সৌভাগ্য লাভ হয়।


শারীরিক ও চিকিৎসাগত ফলাফলঃ


​চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে, শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কম্পন (Tremor) হলো অনৈচ্ছিক, ছন্দময় পেশীর নড়াচড়া। এটি জীবন-হুমকি না হলেও, এটি দৈনন্দিন জীবনে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে এবং অক্ষমতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।

​দৈনন্দিন কাজে অসুবিধা: কম্পনের ফলে লেখা, টাইপ করা, খাওয়া, পান করা, দাড়ি কামানো এবং পোশাক পরা ইত্যাদি সাধারণ কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে।

​মানসিক চাপ ও বিব্রতবোধ: কম্পন বিব্রতকর হতে পারে এবং মানুষের মধ্যে মানসিক চাপ বা উদ্বেগ বাড়াতে পারে, যা কম্পনকে আরও খারাপ করে তোলে

​অক্ষমতা: কিছু গুরুতর ক্ষেত্রে, কম্পন সময়ের সাথে সাথে খারাপ হতে পারে, যার ফলে দৈনন্দিন কার্যকলাপ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয় এবং অক্ষমতা দেখা দেয়।

​অন্যান্য উপসর্গের সাথে সম্পর্ক: কম্পন প্রায়শই অন্যান্য স্নায়বিক অবস্থার উপসর্গ হিসেবে দেখা দেয়, যেমন:

​পার্কিনসন রোগ (Parkinson's Disease): এই রোগের ক্ষেত্রে সাধারণত বিশ্রামের সময় কম্পন দেখা যায়, যা নড়াচড়ার সময় কমে যায়। এর সাথে ধীর গতি, পেশীর কাঠিন্য এবং ভারসাম্যহীনতা থাকতে পারে।

​এসেনশিয়াল ট্রেমর (Essential Tremor): এটি সবচেয়ে সাধারণ নড়াচড়ার সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি, যা সাধারণত হাত ও বাহুতে সক্রিয়তার সময় দেখা যায় (যেমন কিছু ধরার সময়)। এটি মাথা বা কণ্ঠস্বরকেও প্রভাবিত করতে পারে।

​স্ট্রোক: মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেরিবেলার কম্পন দেখা যেতে পারে।

​কম্পনের কারণগুলির মধ্যে রয়েছে: স্নায়বিক ব্যাধি, অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ, মানসিক চাপ, ক্লান্তি, হাইপারথাইরয়েডিজম, এবং কিছু ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।


মন্তব্যঃ ​শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কম্পনের ফলাফল বা প্রভাব নিয়ে আপনার আলোচনাটি অত্যন্ত সময়োপযোগী। ​সব মিলিয়ে, জ্যোতিষ শাস্ত্র ও স্বাস্থ্যগত দিকটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সুস্থ থাকাটাই আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় শুভ ফল।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url